ঈদের ছুটির পর কর্মচাঞ্চল্যে ফিরেছে সাভার-আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল

ঈদের দীর্ঘ ছুটি শেষে আবারও পুরোনো কর্মচাঞ্চল্যে ফিরেছে রাজধানীসংলগ্ন শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়া। ছুটির আমেজ কাটিয়ে গত দুই দিন ধরে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেন পোশাকশিল্প সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা। রবিবার (১৫ জুন) সকাল থেকেই কর্মজীবী মানুষের ঢল নেমেছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক, বাইপাইল ও জামগড়াসহ আশপাশের এলাকায়।

শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে একের পর এক পোশাক কারখানার ফটকে প্রবেশ করছেন। বিভিন্ন কারখানার সামনে দেখা গেছে লম্বা সারি। ঈদের ছুটির পর এ যেন চিরচেনা সাভার-আশুলিয়ার ব্যস্ত চিত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাভার ও আশুলিয়ার প্রায় শতভাগ পোশাক কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। এসব কারখানায় প্রায় ৯৫ শতাংশ শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন। ফলে শিল্পাঞ্চল আবারও কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে।

তবে ফিরতি পথে অনেক শ্রমিককে পোহাতে হয়েছে যানজট ও পরিবহন সংকটের ভোগান্তি। কেউ কেউ বাসের ছাদে চড়েই কর্মস্থলে ফিরেছেন।

আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক জহিরুল ইসলাম বলেন, “গ্রামে ছুটি ভালো কেটেছে। হাতে একদিন সময় নিয়ে ফিরলেও দীর্ঘ যানজটে আটকে পড়ি। শেষমেশ কাজে যোগ দিতে পেরে ভালো লাগছে।”

শ্রমিক জবা খাতুন বলেন, “আজ ভোরে অনেক কষ্টে সাভারে ফিরেছি। সড়কে প্রচণ্ড যানজট, পরিবহনের অতিরিক্ত চাপ—সব মিলিয়ে ভোগান্তিতে ছিলাম। তবু এখন আমরা সবাই মিলে আনন্দমুখর পরিবেশে উৎপাদন শুরু করেছি।”

এদিকে যানজটে আটকে পড়া শ্রমিক রাসেল আমিন বলেন, “শনিবার রাতে রওয়ানা করেও এখনও কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারিনি। বাসের ছাদে করেই ফেরার চেষ্টা করছি। আশা করি আজই কাজে যোগ দিতে পারব।”

পোশাক কারখানার এক কর্মকর্তা মো. জসিম জানান, “আমাদের কারখানায় শতভাগ শ্রমিকের উপস্থিতির লক্ষ্যে বিশেষ পুরস্কার এবং লটারির আয়োজন থাকে। শ্রমিকরা এতে উৎসাহী হয়ে প্রথম দিনেই কাজে যোগ দেন।”

শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি বলেন, “আজ থেকে শতভাগ কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। কয়েকটি কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে সামগ্রিকভাবে শিল্পাঞ্চল শান্ত রয়েছে এবং আমাদের কঠোর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।”

ঈদের ছুটি শেষে আবারও জীবনের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ায়। শ্রমিকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কারখানা এলাকা। আর এই কর্মপ্রবাহই দেশের অর্থনীতিতে ফিরিয়ে আনবে চাঞ্চল্য।