আধিপত্য বিস্তারে রায়পুরায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ গুলিতে নিহত ১, আহত অর্ধশতাধিক
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নাজিম উদ্দীন মেম্বার ও আলাল মুন্সি গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে নিলক্ষার দড়িগাও দক্ষিণপাড়া এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মামুন মিয়া (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ।
নিহত মামুন মিয়া নিলক্ষার দড়িগাও এলাকার আব্দুল আওয়াল মিয়ার ছেলে। তিনি নাজিম উদ্দীন গ্রুপের সমর্থক ছিলেন। মাত্র ১৫ দিন আগে তিনি কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন।
সংঘর্ষ চলাকালে ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও বিএনপির দলীয় কার্যালয়। উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই এক পক্ষের অনুসারীরা ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ, র্যাব এবং সেখানে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদেরও এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য করে বলে জানা গেছে।
আহতদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে দু’জনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে—আব্দুর রশিদের ছেলে বেলাল (৩০) এবং মস্তু মিয়ার ছেলে আব্দুল আওয়াল (৫৫)। আহতদের জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সেনাবাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে টহল জোরদার করে।
রায়পুরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার ঘোষ বলেন, “দীর্ঘদিনের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
এদিকে ঘটনার পর রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চরাঞ্চলে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা ও সেনা ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্তাব দিয়ে ঢাকা সেনানিবাসের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে চিঠি পাঠান।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত এক বছরে রায়পুরা উপজেলায় ১২ জন খুন হয়েছেন। ২৪ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ জনপদে নিয়মিত প্রাণঘাতী সংঘর্ষ ঘটছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সংঘর্ষ ঘটিয়ে চরাঞ্চলে আশ্রয় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে চরাঞ্চলে স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করার কথাও চিঠিতে তুলে ধরা হয়।
What's Your Reaction?
এম নূরউদ্দিন আহমেদ, জেলা প্রতিনিধি, নরসিংদীঃ