শীতের তীব্রতা যেন ইবাদতে বাধা না হয়
শীতের তীব্রতায় অনেকের মধ্যেই অজু নিয়ে কিছুটা অলসতা দেখা দেয়। হাড়কাঁপানো ঠান্ডার কারণে অজু করতে গিয়ে আমরা অজান্তেই তাড়াহুড়ো করে ফেলি। অথচ অজুর কোনো অঙ্গ সামান্য শুকনো থাকলেও নামাজ বা ইবাদত কবুল হবে না। তাই শীতের এই প্রতিকূল সময়ে ইবাদতের পূর্ণতার জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
প্রথমত, শীতে মোটা কাপড় বা জ্যাকেটের কারণে অনেকেই হাতের হাতা ঠিকমতো না গুটিয়েই হাত ধুয়ে নেন। এতে কনুই শুকনো থেকে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে। মনে রাখা জরুরি, কনুই বা টাখনুর সামান্য অংশও যদি শুকনো থাকে, তবে অজু শুদ্ধ হবে না (সহিহ্ মুসলিম: ২৪৬)।
দ্বিতীয়ত, দ্রুত অজু শেষ করতে গিয়ে অনেকেই পায়ের গোড়ালি ঠিকমতো ভেজান না। এ বিষয়ে রাসুল (সা.) কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সর্বনাশ সেই গোড়ালিগুলোর জন্য (যা অজুর সময় শুকনো থাকে), সেগুলো জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে! তোমরা খুব ভালোভাবে অজু করো।’ (সহিহ্ মুসলিম: ২৪১)
তৃতীয়ত, পুনরায় অজুর ভয়ে অনেকেই প্রস্রাব-পায়খানার বেগ চেপে রেখে নামাজ আদায় করেন। এটি যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি শরিয়তে মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘খাবারের উপস্থিতিতে এবং মল-মূত্রের বেগ চেপে রাখা অবস্থায় কোনো নামাজ নেই।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৫৬০)। অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোনো মুমিনের জন্য মল-মূত্রের বেগ নিয়ে নামাজ পড়া বৈধ নয়। (সুনানে আবু দাউদ: ৯১)
শীতের কষ্ট উপেক্ষা করে যথাযথভাবে অজু সম্পন্ন করা মুমিনের ইমানি দৃঢ়তার পরিচয়। তাই আসুন, তাড়াহুড়ো পরিহার করে অজুর প্রতিটি অঙ্গ সুনিপুণভাবে ধৌত করি এবং পূর্ণ পবিত্রতা নিয়ে মহান আল্লাহর দরবারে দাঁড়াই।
What's Your Reaction?
ইসলাম ডেস্কঃ