টেকনাফের গহীন পাহাড়ে র্যাব-বিজিবির হানা

কক্সবাজারের টেকনাফে র্যাব ও বিজিবির এক শ্বাসরুদ্ধকর যৌথ অভিযানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ডাকাত দলের এক সুরক্ষিত আস্তানা। উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী গহীন পাহাড়ে পরিচালিত এই অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অত্যাধুনিক অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং হ্যান্ড গ্রেনেড। এই ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টা ধরে এই রোমাঞ্চকর অভিযান পরিচালিত হয়। উখিয়া ব্যাটালিয়নের (৬৪) অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব ও বিজিবি জানতে পারে, রঙ্গিখালী গলাচিরা নামক দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় চার সদস্যের একটি ডাকাত দল আস্তানা গেড়েছে। এই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের পর মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব ও বিজিবির দুটি বিশেষ টহল দল অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পাহাড়টি চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত সদস্যরা তড়িঘড়ি করে দুটি ফাঁকা গুলি ছুড়ে গহীন অরণ্যে পালিয়ে যায়।
এরপর শুরু হয় মূল অভিযান। র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা পাহাড়ের প্রতিটি সম্ভাব্য স্থানে তল্লাশি চালিয়ে ডাকাতদের লুকানো আস্তানা থেকে ১টি বিদেশি ইউজিআই অস্ত্র, ২টি একনলা লম্বা বন্দুক, ৪টি আর্জেস হ্যান্ড গ্রেনেড এবং ১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে।
লে. কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন আরও জানান, এই ডাকাত দলটি দীর্ঘদিন ধরে রঙ্গিখালী এলাকায় মাদক চোরাচালান, গুম, খুন, অপহরণ এবং চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল স্থানীয় জনগণ। র্যাব ও বিজিবির এই সফল যৌথ অভিযানের ফলে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলি টেকনাফ মডেল থানায় জমা দেওয়া হয়েছে এবং হ্যান্ড গ্রেনেডগুলো নিষ্ক্রিয় করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। পলাতক ডাকাতদের গ্রেপ্তারের জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
What's Your Reaction?






