রাজসাক্ষীর জেরাকে ঘিরে ট্রাইব্যুনালে উত্তেজনা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় ছয় মরদেহ পোড়ানো ও সাতজনকে হত্যার মামলায় রাজসাক্ষী সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) শেখ আবজালুল হকের জেরাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। জেরার এক প্রশ্নকে কেন্দ্র করে প্রসিকিউশন ও স্টেট ডিফেন্সের আইনজীবীদের মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা তর্কবিতর্ক চলে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-২-এর সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ ঘটনা ঘটে।
সকালে সাড়ে ১০টার দিকে রাজসাক্ষী আবজালুলের জেরা শুরু হয়। মামলার আসামি সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আশুলিয়ায় ছয় মরদেহ পোড়ানো ও সাতজনকে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে।
জেরার সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান জিজ্ঞেস করেন, গত বছরের ৫ আগস্ট থানার কোনো পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছিল কি না। রাজসাক্ষী উত্তরে বলেন, না, তবে একজন মারা গেছেন, তিনি অন্য ইউনিটের ছিলেন এবং তার মৃত্যুর ঘটনায় তিনি তদন্তে যুক্ত ছিলেন, যদিও তদন্ত শেষ করতে পারেননি।
এই উত্তরে সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি তোলে প্রসিকিউশন। তারা দাবি করে, “এ ধরনের প্রশ্ন এখানে প্রাসঙ্গিক নয়।” এর ফলে প্রসিকিউশন ও ডিফেন্সের মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা তর্কবিতর্ক চলে। পরে ট্রাইব্যুনালের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন আটজন, যাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, রাজসাক্ষী আবজাল এবং কনস্টেবল মুকুল। তবে সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ আরও আটজন এখনো পলাতক।
রাজসাক্ষী আবজালুলের জেরা শেষ হলে আরও দুই-তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণের কথা রয়েছে। মামলাটি এরপর যুক্তিতর্কে অগ্রসর হবে। সূত্রের খবর, সাক্ষ্যগ্রহণ আগামী মাসের মধ্যভাগে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর মামলার প্রথম দিনে সাক্ষ্য দেন শহীদ আস সাবুরের ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের বাবা মো. খলিলুর রহমান। এর আগে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করে ৫ আগস্টের আশুলিয়ার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন। পরে তাদের লাশ ভ্যানে তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। একজনকে জীবিত অবস্থায় পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়।
What's Your Reaction?
অনলাইন ডেস্কঃ