সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে ভয়াবহ আগুন
কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে নোঙর করা সেন্টমার্টিনগামী ‘দ্য আটলান্টিক ক্রুজ’ জাহাজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার দিকে ঘটা এই দুর্ঘটনায় জাহাজের এক কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে সৌভাগ্যবশত যাত্রার জন্য ঘাটে অপেক্ষমাণ ১৯৪ জন পর্যটকের সবাই নিরাপদে আছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম নুর কামাল (৩৫)। তিনি ওই জাহাজের কর্মচারী ছিলেন। জানা গেছে, আগুন লাগার সময় তিনি জাহাজের ভেতরের একটি কক্ষে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, সকালে যাত্রী পরিবহনের প্রস্তুতির সময় হঠাৎ জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। কোস্টগার্ড ও প্রশাসনের স্বেচ্ছাসেবক দলের সহায়তায় বেলা ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক সৈয়দ মুহাম্মদ মোরশেদ হোসেন বলেন, ‘জাহাজের একটি কক্ষ থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা এক কর্মচারীর দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ভেতরে আর কেউ আটকা পড়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন পর্যটকরা। সী ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, ‘আজ ১৯৪ জন পর্যটকের এই জাহাজে করে সেন্টমার্টিন যাওয়ার কথা ছিল। আগুন লাগার সময় তারা সবাই ঘাটেই অপেক্ষা করছিলেন, কেউ জাহাজে ওঠেননি। যাত্রীদের একটি অংশকে অন্য জাহাজে করে সেন্টমার্টিনে পাঠানো হয়েছে, বাকিরা আগামীকাল যাবেন।’
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা যাত্রী মোহাম্মদ ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘ভাগ্য ভালো ছিল যে আমরা তখনো জাহাজে উঠিনি। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছেন। নিজের চোখের সামনে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখলাম।’
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন প্রাথমিকভাবে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, ‘যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি অন্য কোনো কারণে এই অগ্নিকাণ্ড, তা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটির সদস্য সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।’
উল্লেখ্য, সরকারি ১২টি নির্দেশনা মেনে গত ১ নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিন-কক্সবাজার নৌ রুটে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। ১ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকদের দ্বীপে রাতযাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এই রুটে ৬টি জাহাজ চলাচলের অনুমতি পেয়েছে।
What's Your Reaction?
অনলাইন ডেস্কঃ