হাসিনার মৃত্যুদণ্ড যুগান্তকারী রায়: অ্যাটর্নি জেনারেল
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এটিকে একটি "যুগান্তকারী" রায় হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, "শহীদদের প্রতি, দেশের প্রতি, এদেশের মানুষের প্রতি, সংবিধানের প্রতি, আইনের শাসনের প্রতি এবং আগামী প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে এ রায় যুগান্তকারী।"
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। মামলার অন্য দুই আসামির মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, "আজ বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি রায় হয়েছে। এই রায়ে শহীদরা ন্যায়বিচার পেয়েছে, রাষ্ট্র ন্যায়বিচার পেয়েছে, প্রসিকিউশন ন্যায়বিচার পেয়েছে।" তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, মামলার তিনজন আসামির মধ্যে দুজনকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপর আসামি, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, রাজসাক্ষী হিসেবে নিজেকে আদালতের সামনে উপস্থাপন করায় সার্বিক বিবেচনায় আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
মো. আসাদুজ্জামান জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে তিনটি প্রমাণিত হওয়ায় আদালত সাজা দিয়েছেন। আইনের বিধান অনুযায়ী, আসামিরা যেদিন গ্রেপ্তার হবেন, সেদিন থেকে এই সাজা কার্যকর হবে। রাষ্ট্র আইনিভাবে যা করণীয়, তার সবকিছুই করবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
রায়ের বিস্তারিত তুলে ধরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আদালত শহীদদের পরিবার এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া, শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার এজেন্ডায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো ইস্যু ছিল না বলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা বা আসাদুজ্জামান খান কামালের আপিলের সুযোগ আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, "পলাতক থাকা অবস্থায় আপিল করার সুযোগ বাংলাদেশে না, বিশ্বের কোনো দেশে আছে বলে আমার জানা নেই।" উল্লেখ্য, মামলার তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক রয়েছেন এবং ধারণা করা হয় তারা ভারতে অবস্থান করছেন। একমাত্র চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গ্রেপ্তার অবস্থায় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
What's Your Reaction?
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ