আশুলিয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘেঁষে মেলা; সাধারনের মাঝে ক্ষোভ
আশুলিয়ায় বিভিন্ন স্থানে স্কুল মাদ্রাসা ও মসজিদের পাশে আসাদ ও পলাশ নামের দুই ব্যাক্তির নেতৃত্বে চলছে মেলা। হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ-লাখ টাকা। এই মেলার আড়ালে জুয়ার আসর সহ মাদকের আড্ডাও বসে বলে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। এই অঞ্চলে বেশীরভাগ পোশাক কারখানা থাকায় শ্রমিকরা বেতনের সময় মেলায় গিয়ে তারা তাদের অর্জিত টাকা খরচ করে ফেলে। মেলার সামগ্রী দ্বিগুন দামে কিনে আর্থিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে বলেও গার্মেন্টস শ্রমিকদের অভিযোগ।
আশুলিয়ার মধ্য গাজিরচট ও নরসিংহপুর লালপাহাড় এলাকায় ম্যাসব্যাপী চলছে এই মেলা।
এই মেলায় স্কুলপড়ুয়া কিশোরদের আড্ডায় তাদের লেখাপড়া ব্যহত হচ্ছে। আড্ডার পাশাপাশি চলে মাদক সেবনও। এতে করে একদিকে শিক্ষার্থীরা মাদক সেবনের দিকে ঝুঁকছে, অন্যাদিকে লেখাপড়ার নির্দিষ্ট সময় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে একদিকে সামাজিক অবনতি হতে পারে, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়াসহ তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে না বলে এমটাই অনুশোচনা প্রকাশ করেন অভিভাবক ও স্থানীয়রা।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে স্কুল ঘেঁষে মাস ব্যাপী মেলা চলছে। এতে করে একদিকে মেলার মাইকের শব্দ দূষণে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার বিঘ্ন ঘটছে। অন্যদিকে তাদের লেখাপড়ায় মন বসে না। অনেক সময় লেখাপড়া বাদ দিয়ে মেলার দিকে ছুঁটে যায়। এথেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, স্কুল ও মসজিদ-মাদ্রাসার আশপাশে মাসব্যাপী মেলা বসিয়ে নাচ গান সহ নানা কার্যক্রম করে আসছে। অন্যদিকে নামাজের সময় মাইকের শব্দে খুবই সমস্যা হচ্ছে। প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, তারা কোন ব্যাবস্থা নেয়নি। এছাড়া গাজিরচট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে খেলার মাঠে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে বিভিন্ন দোকানপাট, ভূতের আড্ডা ও নাগরদোলা বসানো হয়েছে। ফলে মাঠের অভাবে শিক্ষার্থীরা শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্কুলের মাঠ শিশুদের জন্য, সেখানে মেলা বসিয়ে ব্যবসা করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এছাড়া মেলায় যে ভূতের আড্ডা বসানো হয়, তা দেখে কোমলমতি শিশু-কিশোররা ভয় পায়। এছাড়াও মেয়েদের দিয়ে মেলার মধ্যে অসামাজিক কার্যকলাপ চালানো হচ্ছে বলেও তাদের অভিযোগ।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, প্রশাসনকে জানানো হয়েছিলো তারা কোন ব্যাবস্থা নেয়নি। দ্রুত মেলা অপসারণ করে বিদ্যালয়ের মাঠ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবিও জানান তারা।
এবিষয়ে মেলার মালিক আসাদকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সে ফোনটি কেটে দেন।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো: আসাদুজ্জামান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মেলার অনুমতি উপজেলা থেকে দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে তারা মেলাগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন। এটার প্রথম প্রতিকার যদি থানার পরিবর্তে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চান সবচেয়ে এটা ভালো হয়। তিনি চালাবেন, না বন্ধ করবেন, সেক্ষেত্রে আমাদেরকে জানালে তখন পুলিশ এ্যাকশনে যাবেন।
এরপরে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম এর সাথে করা হলে তিনি বলেন, এবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
What's Your Reaction?
মোঃ শামীম আহমেদ, স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকাঃ