ভাড়াটিয়ার দোকানে তালা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে মামলা
নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ ইসমাঈলসহ দুই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। গত ২০ মার্চ নোয়াখালী সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী মামলা নং-২২৮ দায়ের করেন সুলতানা রাবেয়া নামের এক ভাড়াটিয়া।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর সুলতানা রাবেয়া সদর উপজেলার দারুল আমান ফ্ল্যাট (উত্তর পাড়) জামে মসজিদ মার্কেটের ২ ও ৯ নম্বর দোকান মসজিদ পরিচালনা কমিটির কাছ থেকে ভাড়া নেন। প্রতিটি দোকানের জন্য জামানত হিসেবে ৩ লক্ষ টাকা করে মোট ৬ লক্ষ টাকা নেওয়া হয় এবং একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর মসজিদ কমিটির এক সভায় মার্কেটের সকল দোকান ঘরের ভাড়াটিয়ার চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর বৃদ্ধি করা হয়।
তবে, গত কিছুদিন আগে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ইসমাঈল স্বপ্রণোদিতভাবে মসজিদের আগের কমিটি বাতিল করে নিজে মসজিদ কমিটির সভাপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এছাড়া, মামলার অপর বিবাদী সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার রাজিবুল হাসান রাজিব সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, তারা দায়িত্ব নেওয়ার পর মসজিদ কমিটির সাথে চুক্তিবদ্ধ ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ করার জন্য কোন নোটিশ ছাড়াই বেআইনি ভাবে দোকানে প্রবেশ করেন এবং তালা ভেঙে দেন। একপর্যায়ে দোকানের সিসি ক্যামেরা ভেঙে বাদীসহ সকল দোকানের তালা ভেঙে তারা নিজেই তালা মেরে চলে যান। এছাড়া, ভাড়াটিয়াদের জানান যে, পূর্বের ভাড়া চুক্তি বাতিল হয়ে গিয়েছে এবং জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। নতুন চুক্তি করতে হলে ভাড়াটিয়াদের আর্থিক সুবিধা দিতে হবে।
মামলার আইনজীবী অভিজিৎ শীল জানান, আদালত বিবাদীদের সাত কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে, মামলার অভিযোগ নিয়ে জানতে একাধিকবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ইসমাঈলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে, মামলার আরেক বিবাদী সদর উপজেলা সহকারী প্রথমিক শিক্ষা অফিসার রাজিবুল হাসান রাজিব বলেন, "আমরা ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে পাঁচবার বৈঠক করেছি, কিন্তু তারা কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। মসজিদ কমিটি যে টাকা খরচ করেছে, সে সম্পর্কে কোনো হিসাব-নিকাশও তারা দেখাতে পারেনি।"
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, "অনেক ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে টাকা পাওনা রয়েছে, তারা এতদিন বিনা ভাড়ায় বসবাস করছিলো। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।"
এ পরিস্থিতিতে আদালত এবং প্রশাসন কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, তা পরবর্তীতে পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। তবে, এই মামলা স্থানীয় প্রশাসন এবং মসজিদ কমিটির মধ্যে জটিল সম্পর্ক এবং ভাড়াটিয়াদের অধিকার রক্ষার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে।
What's Your Reaction?
রিপন মজুমদার, জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালীঃ