রাঙামাটিতে নুনছড়ি পাড়া ওয়্যালুওয়াইন বৌদ্ধ বিহারে দ্বিতীয় কঠিন চীবর দান সম্পন্ন
রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে ওয়াগ্গা ইউনিয়নের দুর্গম নুনছড়ি পাড়া ওয়্যালুওয়াইন বৌদ্ধ বিহারে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দিনব্যাপী দ্বিতীয় শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছে বিহারের পরিচালনা কমিটি ও দায়ক-দায়িকা। সকালে বিহার প্রাঙ্গণে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধ পূজা গাথা পাঠ, পঞ্চশীল গ্রহণ, বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান ও পিন্ডদানসহ নানাবিধ ধর্মীয় দানের আয়োজন করা হয়।
দ্বিতীয় পর্বে বেলা আড়াইটায় কঠিন চীবর ও কল্পতরু শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় এবং মঞ্চে তা আনা হয়। এরপর উদ্বোধনী ধর্মীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সকল প্রাণীর হিতসুখ ও বিশ্বশান্তির জন্য পঞ্চশীল গ্রহণ, কল্পতরু দান ও কঠিন চীবর দান সম্পন্ন করা হয়।
ধর্মীয় সভায় নোয়াপাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত পুঃঞাওয়াইন্সা মহাথেরো সভাপতিত্ব করেন। প্রধান আশীর্বাদক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজনিকায় মার্গে ৬ষ্ঠ মহাসংঘনায়ক ও ঐতিহ্যবাহী চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারের পূজনীয় অধ্যক্ষ ভদন্ত পামোক্ষা মহাথেরো। এছাড়া ডলুইছড়ি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ তিষা মহাথেরোসহ বিভিন্ন বিহার থেকে ভিক্ষু সংঘও উপস্থিত ছিলেন।
নুনছড়ি পাড়া ওয়্যালুওয়াইন বৌদ্ধ বিহারের পরিচালনা কমিটির সভাপতিত্ব করেন সাবেক মেম্বার ঞোলাপ্রু মারমা। সহ-সভাপতি হিসেবে ছিলেন উসাথোয়াই কার্বারি, সাধারণ সম্পাদক ম্রাথোয়াই মারমা, সাংগঠনিক সম্পাদক দুংচিংমং মারমা, এবং বাশিংমং মারমা প্রমুখ।
দানোত্তম কঠিন চীবর দান বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দানের একটি হিসেবে পরিচিত। তুলা থেকে সুতা তৈরি করে, রঙ করা, আগুনে শুকানো এবং কোমর তাঁতের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বুনন ও সেলাই করা এই চীবর দানকে ‘কঠিন চীবর দান’ বলা হয়। এই দানের মাধ্যমে অর্জিত পুণ্য অন্যান্য দানের তুলনায় বহুগুণ বেশি। বর্ষাবাস শেষ হওয়ার পর এক মাসব্যাপী এই দানোৎসব উদযাপিত হয়।
কঠিন চীবর দানের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা একটি সামাজিক মিলনমেলায় মিলিত হন এবং ধর্মীয় অনুশীলন ও সামাজিক সম্প্রীতি একত্রে উদযাপন করে থাকেন।
What's Your Reaction?
রিপন মারমা, কাপ্তাই প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটিঃ