সুবর্ণচরে চাঁন্দা ডাকাতের ত্রাস: র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার, পিস্তল জব্দ

রিপন মজুমদার, জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালীঃ
Oct 28, 2025 - 16:43
 0  15
সুবর্ণচরে চাঁন্দা ডাকাতের ত্রাস: র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার, পিস্তল জব্দ

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় দীর্ঘ দিন ত্রাস সৃষ্টি করা চাঁন মিয়া ওরফে চাঁন্দা ডাকাতকে (৩৮) র‌্যাব-১১ গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তার হেফাজত থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, একটি রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, গত পনের মাস ধরে অস্ত্রধারী চাঁন্দা ডাকাতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা জিম্মি হয়ে পড়েছিলেন।

৫ আগস্টের পর তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন। এলাকাবাসীর পাশাপাশি স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা পর্যন্ত তার ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশও তার বিরুদ্ধে মামলা নিতে অনীহা প্রকাশ করেছিল। গ্রেপ্তার চাঁন্দা ডাকাত মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চর আলাউদ্দিন গ্রামের মোজাম সর্দারের বাড়ির আব্দুল বাতেনের ছেলে এবং মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক দিদারের ভাই।

র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তার আগে সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে চরওয়াপদা ইউনিয়নের আলআমিন বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, চাঁন্দা ডাকাত এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে নিরীহ মানুষদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জুলুম, নির্যাতন ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছিল। তিনি বিভিন্ন দাঙ্গা-হাঙ্গামা তৈরির জন্য আগ্নেয়াস্ত্রও নিজের হেফাজতে রেখেছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্টের পর মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে চাঁন্দা ডাকাত ও তার বাহিনী নির্বিচারে চাঁদাবাজি, খামারের গরু-মহিষ ও মাছ লুট করে নিয়েছে। ইউনিয়নটি এক সময় শান্তির জনপদ হলেও এখন সন্ত্রাস, মাদক ও অবৈধ অস্ত্রের কারণে অশান্তির ছায়ায় ভুগছে। একই সময়ে মোহাম্মদপুরে চাঁন্দা ডাকাত বাহিনী, ফারুক বাহিনী এবং মাদককারবারি তোতলা বাহিনী সক্রিয় ছিল। চাঁন্দা ডাকাত ও ফারুক বাহিনী স্থানীয় খামার থেকে গরু-মহিষ ও মাছ লুট করে বিক্রি করতো, আর তোতলা বাহিনী চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ থেকে নদীপথে মাদকের চালান এনে বিক্রি করতো।

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিন বলেন, চাঁন্দা ডাকাত ও ফারুক মাঝি স্থানীয় খামার থেকে বহু গরু-মহিষ ও প্রকল্পের ধান ও মাছ লুট করে নিয়ে গেছে। খামারের লোকজন অস্ত্রের ভয় এবং প্রাণের নিরাপত্তাহীনতায় প্রতিবাদ করতে পারেননি।

র‌্যাব হেফাজতে গ্রেপ্তার চাঁন্দা ডাকাতের সঙ্গে সরাসরি বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার ভাই ও মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. দিদার অভিযোগ নাকচ করে বলেন, তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোনো চুরির অভিযোগ নেই। ষড়যন্ত্র করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের কমান্ডার মিঠুন কুমার কুণ্ডু জানান, গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে চরজব্বর ও হাতিয়া থানায় হত্যার চেষ্টাসহ অন্যান্য মামলা রয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার আসামির বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অবৈধ অস্ত্র ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow