টেলিগ্রামে প্রেম, অতঃপর যৌনপল্লিতে বিক্রি

নোয়াখালীর এক মাদরাসা ছাত্রীকে (১৭) টেলিগ্রামে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ঢাকায় নিয়ে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় প্রধান আসামি শুভজিৎ মণ্ডলকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। মঙ্গলবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় র‍্যাব-১১ ও র‍্যাব-৬ এর একটি যৌথ দল সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেন র‍্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।

গ্রেপ্তারকৃত শুভজিৎ মণ্ডল সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার বদরতলা গ্রামের শংকর মণ্ডলের ছেলে।

র‍্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তি এবং ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী কিশোরী নোয়াখালীর সদর উপজেলার বাসিন্দা এবং স্থানীয় একটি মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জারে 'অভিজিৎ' ছদ্মনামে এক তরুণের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে শুভজিৎ তার আসল ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে ওই ছাত্রীর সঙ্গে টেলিগ্রামে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।

গত ৭ মে, শুভজিৎ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে বাড়ি থেকে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে তারা ওঠে। হোটেলে வைத்து শুভজিৎ কৌশলে কিশোরীর কাছে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা হাতিয়ে নেয় এবং তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে, সে ওই কিশোরীকে এক দালালের কাছে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেয়।

সেখানে অমানবিক জীবনযাপনের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী কিশোরী কৌশলে অন্য এক মেয়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা গত ১৫ জুন একটি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় ঢাকার জুরাইন এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‍্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন আরও বলেন, "গ্রেপ্তারকৃত শুভজিৎ মণ্ডলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এই মানবপাচার চক্রের আরেক সদস্য সাব্বিরকে গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"

গ্রেপ্তার আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয়রা।