নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে অনুমোদনহীন কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারে দুদকের অভিযান

রিপন মজুমদার, জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালীঃ
Jul 3, 2025 - 19:27
 0  4
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে অনুমোদনহীন কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারে দুদকের অভিযান

নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের অনুমোদনহীন কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. জাহেদ আলম এবং কোর্ট পরিদর্শক মো. ইদ্রিসের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের নিজস্ব অনুমোদিত ল্যাব থাকলেও কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিটে পৃথকভাবে একটি ল্যাব পরিচালনা করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। এছাড়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা ডায়ালাইসিস, ক্যাথেটার ও ফিস্টুলা করার নিয়ম থাকলেও এসব কাজ করছেন একজন টেকনিশিয়ান, যার নাম ইসমাইল।

সরকারি নির্ধারিত ফি ৫০০ টাকা হলেও ক্যাথেটার করতে রোগীদের কাছ থেকে ২,৫০০ টাকা এবং ফিস্টুলা করতে ৬,০০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। একই টেস্ট হাসপাতালের মূল ল্যাবে ৭০০ টাকায় করা হলেও কিডনি ল্যাবে তার জন্য আদায় করা হয় ১,৪০০ টাকা। এভাবে প্রতি মাসে প্রায় ২০ লাখ টাকা অবৈধভাবে আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই আয় থেকে একটি অংশ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তিদের খামে করে পৌঁছে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। পুরো কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করেন ডা. মামুন পারভেজ, যিনি একজন সরকারি বেতনভুক্ত কর্মকর্তা হয়েও প্রতি মাসে ইউনিট থেকে ১০ হাজার টাকা করে গ্রহণ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, ডা. মামুন নামের পাশে ভূয়া ডিগ্রি ব্যবহার করে নিজেকে কিডনি বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দিয়ে ৬০০ টাকা ভিজিটে বাহিরে চেম্বারও পরিচালনা করছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডা. ফজলে এলাহী খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে, অভিযুক্ত ডা. মামুন পারভেজ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা এই ইউনিট পরিচালনা করছি। এখানে কোনো দুর্নীতি হয় না এবং বর্তমানে আমি বাইরে কোনো চেম্বারও করছি না।”

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

অভিযান শেষে দুদকের কোর্ট পরিদর্শক মো. ইদ্রিস সাংবাদিকদের জানান, “বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সত্যতা মিলেছে। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন আকারে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে।”

অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে দুদক।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow