ভোর থেকেই জমে উঠেছে ভাটপাড়া বাজারের কোরবানির পশুর হাট

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাচুড়িয়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া বাজারে প্রতিদিন ভোর থেকেই জমে উঠছে কোরবানির পশুর হাট। গত রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই হাটে পাচুড়িয়া ইউনিয়ন ছাড়াও বোয়ালমারী, মোহাম্মদপুর ও লোহাগড়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসছেন পশু ক্রেতা-বিক্রেতারা।
হাট পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্রেতা-বিক্রেতার চাহিদার ভিত্তিতে আগামীকাল শুক্রবারও প্রতিদিনের মতোই ভোর থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত হাট বসবে।
ঈদের আমেজ ইতোমধ্যেই হাটে ছড়িয়ে পড়েছে। ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে আগামী শনিবার। এ উপলক্ষে হাটে প্রতিদিনই গরু ছাড়াও ছাগলসহ নানা কোরবানির পশু উঠছে। সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে দেশি জাতের গরু। যদিও সব ধরনের গরুই হাটে আছে, তবে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি।
ভারত, মিয়ানমার ও ভুটান থেকে পশু আমদানি কম হওয়ায় দেশি গরুর প্রাধান্য বেশি বলেই মত দিয়েছেন হাটে আগত অনেকে। এর পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে কিছু সংকর জাতের গরুও, যেগুলো দেখতে অনেকটা বিদেশি গরুর মতো।
হাট পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হেমায়েত হোসেন বলেন, “প্রতি বছর ঈদ উপলক্ষে অস্থায়ীভাবে এ হাট বসে। এবার বিদেশি গরু তেমন আসেনি, যা আছে তা অধিকাংশই সংকর জাতের।”
পাচু মাতুব্বর, জবদুল মাতুব্বর, আবুল বাশার, নজরুল মেম্বার, রেজাউল শেখসহ অনেক ক্রেতা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার কিছুটা বেশি দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। দুই থেকে আড়াই মণ ওজনের গরুর দাম ধরা হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকার মধ্যে।
বোয়ালমারীর গুলবাহ ইউনিয়নের রেনিনগর এলাকার বাসিন্দা হালিম শেখ নাতিকে সঙ্গে নিয়ে হাটে এসেছেন গরু কিনতে। তিনি বলেন, “এটা একটা উৎসবের মতোই। নাতিকে নিয়ে এসেছি, ওর পছন্দ হলে আর দামের সঙ্গে মিললে কিনব।”
মোহাম্মদপুর উপজেলার কালিশঙ্কর গ্রামের প্রবাসী সুলতান মাহমুদ মিয়া বলেন, “বাড়ির সবাইকে নিয়ে হাটে এসেছি। ছোট সাইজের দেশি গরুই আমাদের লক্ষ্য। ব্যয় হিসেব করেই চলতে হবে।”
হাটে বিক্রির জন্য চারটি ছোট গরু এনেছেন বোয়ালমারীর গুনবাহ এলাকার ব্যবসায়ী সোহেল শেখ। তিনি জানান, “এখনো বেচাকেনা তেমন শুরু হয়নি। তবে ক্রেতারা ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম করছেন।”
অন্যদিকে কালিশঙ্করপুর থেকে আটটি দেশি গরু এনেছেন আব্দুল হামিদ। তিনি বলেন, “আমার গরুগুলোর দাম এক লাখ ৬০-৭০ হাজার টাকার মতো। কেউ কেউ ১ লাখ ১০-১৫ হাজার বলছে।”
হাটের হাসিল আদায়ের দায়িত্বে থাকা রফিক মিয়া বলেন, “বেচাকেনা ভালোই চলছে। চাহিদা বিবেচনায় শুক্রবারও হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
What's Your Reaction?






