চাঁদাবাজি রোধে কঠোর অবস্থানে আশুলিয়া থানা পুলিশ, স্বস্তি ফিরেছে ব্যবসায়ীদের মাঝে

দীর্ঘদিনের চাঁদাবাজির অভিশাপ থেকে মুক্তি মিলেছে আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন ব্যবসায়ীদের। চাঁদাবাজি, হামলা-পাল্টা হামলা এবং মানববন্ধনের মতো অস্বস্তিকর পরিস্থিতির পর পুলিশের জোরালো অবস্থান চিত্র পাল্টে দিয়েছে পুরো এলাকায়। বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়কের ব্যবসায়ী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মাঝে এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস। পুলিশের কণ্ঠে ঘোষণা—“চাঁদাবাজদের রেহাই নেই”—ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে এই বার্তাই এখন আশার আলো হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের কাছে।
ঢাকার প্রবেশদ্বারখ্যাত বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের নিয়ন্ত্রণে ছিল। অভিযোগ রয়েছে, হকার থেকে শুরু করে পরিবহন কাউন্টার, হোটেল-মোটেল ও খুচরা দোকান পর্যন্ত কেউই বাদ যায়নি এদের হাত থেকে। যারা চাঁদা দিতে অস্বীকার করত, তাদের উপর নেমে আসত হামলা ও ভাঙচুর। এমনকি, চাঁদা ভাগাভাগি নিয়েও একাধিকবার চক্রগুলোর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে পুলিশের হস্তক্ষেপকে ‘টাইমলি ও দৃঢ় পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন ভুক্তভোগীরা। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সম্প্রতি আশুলিয়া থানা পুলিশ চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করে অভিযান শুরু করেছে। প্রতিটি পরিবহন কাউন্টার ও দোকানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে এবং চাঁদা না দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহন কাউন্টার মালিক জানান, “চাঁদাবাজির কারণে প্রতিদিন লোকসানে পড়ছিলাম। এখন পুলিশ যেভাবে মাঠে আছে, এতে আমরা নতুন করে আশার আলো দেখছি।”
এক ক্ষুদ্র দোকানদার বলেন, “প্রশাসনের কাছে বহুবার অভিযোগ করেও লাভ হয়নি। কিন্তু এখন পুলিশ নিজেরা এসে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা সাহস পাচ্ছি।”
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, “চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আমাদের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি রয়েছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। জনগণের সহযোগিতা পেলে দ্রুতই এই দৌরাত্ম্য বন্ধ করা সম্ভব।”
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিনুর কবির এক মাইকিং ভিডিওতে বলেন,
“আমরা আগের সেই ৫ই আগস্টের আগের পুলিশ না। এবার কঠোর অবস্থানে আছি। চাঁদাবাজি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অভিযান চলবে। কেউ যদি অন্যায় করে, আমরা সর্বোচ্চ আইন ব্যবহার করব। মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়াই আমাদের অঙ্গীকার।”
পুলিশের এমন শক্ত অবস্থানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা। তাঁরা মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি এই উদ্যোগ অব্যাহত রাখে, তবে বাইপাইল শুধু নয়, পুরো আশুলিয়া এলাকাতেই ফিরবে দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি ও নিরাপত্তা।
What's Your Reaction?






