শ্রীনগরে নারী কেলেঙ্কারির হোতা স্বপন মেম্বারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা

এমএ কাইয়ুম, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জঃ
Jun 25, 2025 - 20:07
 0  33
শ্রীনগরে নারী কেলেঙ্কারির হোতা স্বপন মেম্বারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বহুল আলোচিত নারী কেলেঙ্কারির হোতা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতি ইউপি সদস্য স্বপন মেম্বারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে শ্রীনগর থানা কর্তৃপক্ষ মামলা দুটি রেকর্ড করেছে। অভিযুক্ত স্বপন মেম্বার বর্তমানে স্ব-পরিবারে পলাতক রয়েছেন।

ভুক্তভোগী নারী সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে গত ১৪ জুন পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে এবং ১৬ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের অভিযোগে পৃথক মামলা করেন। অভিযোগের বিবরণে উঠে এসেছে লোমহর্ষক এক কাহিনি।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেলিনার বিয়ে হয় ঝাপুটিয়া গ্রামের ফারুক দেওয়ানের সঙ্গে। তিন বছরের মাথায় স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার নোটিশ নিতে এসে পরিচয় হয় শ্রীনগর ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য স্বপন মেম্বারের সঙ্গে।

সেলিনাকে ‘মীমাংসার’ প্রস্তাব দিয়ে নিজের দোকানে ডেকে নেন স্বপন মেম্বার। পরে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেন বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী। সেই সময় স্বপন তাকে নিজের ভাড়াটিয়া বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বন্ধু-বউ পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে দেন।

পরদিন আদালতে গিয়ে মামলার নথি তুলে নেওয়ার নামে সেলিনার কাছ থেকে একাধিক কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেন স্বপন। এরপর দেড় লাখ টাকা ধার নিয়ে আত্মসাৎ করেন। এরপর থেকেই সেলিনাকে ‘স্ত্রী’ দাবি করে ঘর-সংসারের জন্য চাপ দিতে থাকেন।

পরিস্থিতি বুঝে সেলিনা কৌশলে বাসা ছেড়ে লৌহজং চলে গেলে, স্বপন সেখানে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে পুনরায় ষোলঘর এলাকায় বাসা ভাড়া করে ‘স্বামী’ হিসেবে সংসার শুরু করেন। এসময় সেলিনা তিন মাসের গর্ভবতী হয়ে পড়লে স্বপন মেম্বার ওষুধ প্রয়োগে সন্তান নষ্ট করে দেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

এরপর জোর করে উলঙ্গ ছবি তুলে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করতে চাইলেও রাজি না হওয়ায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান এবং তাকে এক পর্যায়ে নিজ বাসায় আটক করে রাখেন। এই ঘটনায় সেলিনার বাবা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

এমন পরিস্থিতিতে সেলিনা আদালতের দ্বারস্থ হলে বিজ্ঞ আদালত শ্রীনগর থানা পুলিশকে দুটি মামলা রেকর্ডের নির্দেশ দেন।

অভিযোগ ওঠার পর থেকেই স্বপন মেম্বার ও তার পরিবারের সদস্যরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মামলার কার্যক্রম শুরু হলেও অভিযুক্ত এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।

স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, স্বপন মেম্বারকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow