জামিনে মুক্ত বেরোবির শিক্ষক মাহমুদুল হক দুই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ছিলেন

রংপুরের হাজিরহাট থানায় দায়ের হওয়া দুটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হক।
রবিবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এর আগে বিকেলে রংপুরের যুগ্ম মহানগর আদালতের বিচারক মার্জিয়া খাতুন তার জামিন শুনানি শেষে চার্জশিট না হওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন। মামলার পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে ২ জুলাই।
গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ২০২৪ সালের ২ আগস্ট মুদি দোকানি সমেস উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের মামলায় নিজ বাসা থেকে মাহমুদুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই মামলায় তিনি ৫৪ নম্বর আসামি ছিলেন। এরপর ১৮ জুলাই গুলিতে নিহত অটোচালক মানিক মিয়ার হত্যা মামলায় তাকে ‘শ্যোন অ্যারেস্ট’ দেখানো হয়, যেখানে তিনি ১৯ নম্বর আসামি।
তাঁর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে।
রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী জানান, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ও বাইরে সংঘর্ষের ঘটনায় অনেকে জড়িত ছিলেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবি বিশ্লেষণ করে তদন্তের অংশ হিসেবে মাহমুদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তাঁর সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতে তোলা হয়।”
সমেস উদ্দিন হত্যা মামলার বাদী আমেনা বেগম অভিযোগ করেন, ২ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে সমেস উদ্দিনকে দোকান থেকে টেনে বের করে লোহার রড দিয়ে পেটানো হয় এবং পরে পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়।
এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ মোট ৫৪ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়। ঘটনার পর কবরস্থানে ‘জাতীয় বীর সমেস উদ্দিন’ লিখিত একটি সাইনবোর্ড ভাইরাল হয়, যেখানে মৃত্যুর কারণ হিসেবে স্ট্রোকের উল্লেখ ছিল। তবে পরবর্তীতে সেই সাইনবোর্ডটি কবর থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
এদিকে মাহমুদুল হকের গ্রেপ্তারের তিন দিনের মাথায় হাজিরহাট থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুনকে হঠাৎ বদলি করে ডিবিতে পদায়ন করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়গুলো তদন্তাধীন রয়েছে এবং তদন্ত শেষে চার্জশিট দাখিল করা হবে।
What's Your Reaction?






