রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় সম্প্রচার হবে শেখ হাসিনার মামলার রায়
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় সরাসরি দেখা যাবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়। আগামী সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলার রায় ঘোষণা করবে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ওই ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচার করবে। একই সঙ্গে ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকায় বড় স্ক্রিনে রায় প্রদর্শনের ব্যবস্থা করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও রায়টি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
এই মামলার তিন আসামির মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তাদের মধ্যে সাবেক আইজিপি মামুন ইতোমধ্যে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনজনের বিরুদ্ধেই আনা হয়েছে মোট পাঁচটি অভিযোগ।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠনের পর প্রথম যে মামলাটি গ্রহণ করা হয়, তা ছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। ধাপে ধাপে তদন্ত প্রতিবেদন জমা, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল, সাক্ষ্যগ্রহণ এবং যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া অগ্রসর হয়। চলতি বছরের ১০ জুলাই তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়।
তিন আসামির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো হলো— গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার নির্দেশ; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পোড়ানোর অভিযোগ। তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান বর্তমানে পলাতক এবং সাবেক আইজিপি মামুন এই মামলার একমাত্র গ্রেপ্তার আসামি।
মামলার যুক্তিতর্কে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন উভয় আসামির খালাস চান। রাজসাক্ষী মামুনের পক্ষ থেকেও খালাস আবেদন করেন তার আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
গত ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শেষে ট্রাইব্যুনাল জানায়, রায় ঘোষণার তারিখ ১৩ নভেম্বর জানানো হবে। এরপর নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ১৭ নভেম্বরকে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়। এখন দেশজুড়ে সকলের দৃষ্টি সোমবারের রায়ের দিকে, যা টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় সরাসরি দেখা যাবে।
What's Your Reaction?
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ