নওগাঁয় হঠাৎ বেড়েছে চালের দাম, বিপাকে সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষ

দেশের অন্যতম প্রধান ধান ও চাল উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁয় হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষ। বোরো ধানের মৌসুম শেষ হলেও বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
গত এক সপ্তাহে পাইকারি বাজারে চালের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৪ টাকা, আর খুচরা বাজারে বেড়েছে ৫ থেকে ৬ টাকা। এতে করে স্বল্প আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। অনেকেই অভিযোগ করছেন, মিল মালিক ও কিছু বড় ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থিতিশীল করছেন।
নওগাঁ শহরের আলুপট্টি পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, জিরাশাইল ৬৮-৭০ টাকা, কাটারি ৭০-৭২ টাকা, ব্রি-২৮ চাল ৬২-৬৪ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৬ টাকায়। অথচ এক সপ্তাহ আগেও এসব চাল ৪ থেকে ৬ টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছিল।
নওগাঁ পৌরসভার খুচরা বাজারেও একই চিত্র। এখন সেখানে জিরাশাইল ৭০-৭২ টাকা, কাটারি ৭৫-৮০ টাকা, ব্রি-২৮ চাল ৬৫-৬৬ টাকা ও স্বর্ণা-৫ চাল ৫৮-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাল কিনতে আসা রিকশাচালক আশরাফুল আলম বলেন, “আগে ৫ কেজি চাল কিনতাম ৩০০ টাকায়, এখন দিতে হচ্ছে প্রায় ৩৫০ টাকা। এইভাবে চললে খাওয়া দাওয়াই বন্ধ হয়ে যাবে।” গৃহিণী রেকেয়া বেগম জানান, “চালসহ সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।”
ক্ষুদ্র চাল বাজার সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “বড় ব্যবসায়ীরা বেশি দামে ধান কিনে মজুদ করে রেখেছে। এটা এক ধরনের সিন্ডিকেট। প্রশাসনের তদারকি না থাকায় বাজার এমন অবস্থায় পৌঁছেছে।”
এ বিষয়ে জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন জানান, “কৃষকদের কাছ থেকে বেশি দামে ধান কিনতে হয়েছে বলেই কিছুটা দাম বেড়েছে। তবে কিছু ব্র্যান্ড কোম্পানি ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজার স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন।”
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকার বলেন, “বাজার নিয়ন্ত্রণে ওএমএস কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং বিভিন্ন মিল পরিদর্শন করা হচ্ছে। অবৈধ মজুত পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, “চালের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে জেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করে থাকলে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
What's Your Reaction?






