সমঝোতার চুড়ান্ত পর্যায়ে জামায়াত-এনসিপি-এবি পার্টি

মোঃ রহমাতুল্লাহ, স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকাঃ
Dec 25, 2025 - 20:08
 0  23
সমঝোতার চুড়ান্ত পর্যায়ে জামায়াত-এনসিপি-এবি পার্টি

সমঝোতা হলে বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী চ্যালেঞ্জ নিয়েও ভাবতে হবে না। আসনের নিশ্চয়তাও বেশি পাওয়া যাবে। জোট সূত্র জানায়, গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটে আরও একাধিক দল যুক্ত হতে আলোচনা করছে, তা-ও চলতি সপ্তাহে চূড়ান্ত হতে পারে। এরপর বিভিন্ন আসনে সমন্বিত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।

এবি পার্টির এক নেতা খোলাচোখকে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটে আরও কয়েকটি দল যুক্ত হওয়ার আলোচনায় রয়েছে। বিশেষ করে বিএনপির সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতায় যায়নি—এমন দলগুলো আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবে। তবে এই জোটে নির্বাচনে খুব বেশি সুবিধা করা যাবে না—এমন বাস্তবতা আছে। সে ক্ষেত্রে বড় দুই দলের একটির সঙ্গে আমরা সমঝোতা বা জোটে যেতে পারি। সে ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত জামায়াতই এগিয়ে।’

জামায়াতের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত জোট না হলেও গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের ব্যানারে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ারও প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন জোটের নেতারা। এরই মধ্যে জোটের সমন্বিত প্রার্থী বাছাই ও সমন্বিত রাজনৈতিক ইশতেহার, ব্র্যান্ডিং এবং প্রচার কৌশল তৈরিতে পৃথক দুটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। এনসিপি প্রথম ধাপে ১২৫ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৪০-৫০ আসনে প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা সহসাই ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে। এবি পার্টি ১০৯টি আসনে প্রার্থী তালিকা আগেই প্রকাশ করেছে। আর গণতন্ত্র মঞ্চেরও প্রার্থী ঘোষণা করা হয়; সেখানে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ৩০ জনের মতো আছেন। নতুন জোটে এই সংখ্যা ৪০-৫০-এ যেতে পারে। এসব প্রার্থীর মধ্যে সমন্বয় করে ৩০০ আসনে মনোনয়ন ঠিক করার প্রক্রিয়া চলছে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘এবি পার্টির এরই মধ্যে ১০৯ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। আগামীতে তিন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বসে সমন্বয় করে জোটগত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে।’

এনসিপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, বিদ্যমান কাঠামোর মধ্যেই নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য স্বাভাবিক হলেও, এতে গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়েছে। বিপ্লবী শক্তির প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণ দীর্ঘমেয়াদে রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড ও জুলাই শক্তির ওপর ধারাবাহিক হুমকি নতুন করে ভয়ের সংস্কৃতি ফিরিয়ে এনেছে। এই পরিস্থিতিতে জুলাই বিপ্লবের চেতনা রক্ষা, আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াই অব্যাহত রাখা এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে তুলতে সংসদের ভেতরে ও বাইরে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ বাস্তবতায় এনসিপিকে তাদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী কৌশল নতুন করে ভাবতে হচ্ছে; প্রধান দলগুলো বাস্তবতা না বুঝলে দলটি নিজস্ব পথেই এগিয়ে যাবে।

তবে এনসিপি আসন সমঝোতায় গেলেও নিজেদের প্রতীক তথা শাপলা কলি প্রতীকেই নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনসিপির জোটে যেসব দল আছে কিংবা যুক্ত হবে তারাও শাপলা কলিতে ভরসা রাখতে চাচ্ছেন। বিশেষ করে যেসব দলের নিবন্ধন নেই তারা শাপলা কলি প্রতীকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা হলেও এনসিপির প্রার্থীরা ‘শাপলা কলি’ প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নেবেন।

তিনি বলেন, ‘এনসিপির কেউ ধানের শীষ বা অন্য প্রতীকে ইলেকশন করবেন না। আমাদের যদি কারও সঙ্গে আসন সমঝোতা হয় বা আলোচনা যদি হয়, সে ক্ষেত্রেও আমরা শাপলা কলি প্রতীকে ইলেকশন করব।’

এদিকে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান সংবাদ সম্মেলনে বলেন বিগত ১৬/১৭বছর বিএনপির সঙ্গে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে কাজ করেছি কিন্তু বিএনপির এখন সু-দিন তাই আমাদের পর্যাপ্ত মূল্যায়ন করেনি।

জামায়াতের সঙ্গে জোট করবেন কিনা এমন প্রশ্নে ডাঃ ইরান বলেন - বিগত ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে আমরা বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে এককভাবে আন্দোলন করেছি তাই জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে, তাই জামায়াত ইসলামী আমাদের আহ্বান করলে আমরা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করব।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow