চীবর উৎসর্গের মধ্যদিয়ে সাপছড়ি বৌদ্ধ বিহার কঠিন চীবর দান উৎসব সম্পন্ন
পঞ্চশীল প্রার্থনা ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে ওয়াগ্গা সাপছড়ি বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সাপছড়ি বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি ও দায়ক-দায়িকা উদ্যোগে দিনব্যাপী বৌদ্ধ বিহার মাঠে বুদ্ধ বন্ধনা, বিশ্বশান্তি কামনায় প্রার্থনা, পূজনীয় ভিক্ষু সংঘকে পিণ্ডদান, জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, মঙ্গলাচারণ, বুদ্ধ পূজা, ধর্ম দেশনা, পঞ্চশীল, অষ্টপরিস্কার দান, বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘ দান, প্রাতঃরাশ, কল্পতরু সহ নানাবিধ দান আয়োজন করা হয়।
দ্বিতীয় পর্বে দুপুর ২ টার দিকে কঠিন চীবর ও কল্পতরু শোভাযাত্রার মাধ্যমে মঞ্চে আনা হয়। এরপর উদ্বোধনী ধর্মীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে সকল প্রাণীর হিতসুখ ও বিশ্বশান্তি কামনায় পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘ দান, অষ্টপরিস্কার দান, বুদ্ধ মূর্তি দান, কল্পতরু দান এবং কঠিন চীবর দান সম্পাদন করা হয়।
সাপছড়ি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ক্ষেমানন্দ ভিক্ষু সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। দেবতাছড়ি মহাজনপাড়া স্বধর্ম জ্যোতি বৌদ্ধ বিহারে অধ্যক্ষ ভদন্ত উ.ক্ষেমিন্দা মহাথেরো প্রধান আশীর্বাদক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, রাজনিকায় মার্গে ৬ষ্ঠ মহাসংঘ নায়ক, ঐতিহ্যবাহী চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারের পূজনীয় বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত পামোক্ষা মহাথেরো, ওয়াগ্গা জনকল্যাণ বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ সুমেধানন্দ মহাথেরো এবং চট্টগ্রাম কাতাল গঞ্জ নব পন্ডিত বিহার উপ-অধ্যক্ষ ভদন্ত তন্ হংকর থের স্বধর্ম দেশক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সকল ধর্মগুরুকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
এর আগে স্বাগত বক্তব্য দেন সাপছড়ি বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি অজিত কুমার তঞ্চঙ্গ্যা। এই সময় বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নর-নারীরা দলে দলে যোগদান করেন এবং জগতের সকল প্রাণীর হিতসুখ ও মঙ্গল কামনায় সমবেত প্রার্থনা ও পঞ্চশীল গ্রহণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
দানোৎসবে বিভিন্ন বিহারের পূজনীয় ভিক্ষু সংঘ, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, হেডম্যান, কার্বারিসহ শতাধিক দায়ক-দায়িকা উপস্থিত ছিলেন। ধর্মসভা ও পঞ্চশীল গ্রহণের পর চীবর দানের মাধ্যমে ‘মুক্তির অহিংসা বাণী ছড়িয়ে যাক মানুষে মানুষে এবং সামনের দিনগুলোতে শান্তি ফিরে আসুক ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের’ এমন প্রার্থনার মধ্যদিয়ে চীবর দানের সমাপ্তি ঘটে।
What's Your Reaction?
রিপন মারমা, কাপ্তাই প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটিঃ