কাল বৈশাখী ঝড়ে ঘরহারা বাক প্রতিবন্ধী জোহরার পাশে ইউএনও, উপহার পেলেন নতুন ঘর

কবির হোসেন, আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর ) প্রতিনিধিঃ
Jun 30, 2025 - 19:34
 0  7
কাল বৈশাখী ঝড়ে ঘরহারা বাক প্রতিবন্ধী জোহরার পাশে ইউএনও, উপহার পেলেন নতুন ঘর

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া বাক প্রতিবন্ধী জোহরা বেগমের মাথা গোঁজার একমাত্র আশ্রয়টি এখন নতুন আকারে ফিরে এসেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবালের মানবিক হস্তক্ষেপে নতুন একটি সেমিপাকা ঘর পেয়েছেন তিনি। এতে করে দুঃসহ জীবনসংগ্রামের মাঝে আশার আলো দেখছেন এই অসহায় নারী।

উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের বুড়াইচ লস্কর বাড়ির বাসিন্দা বাক প্রতিবন্ধী জোহরা বেগম। ঝড়ে বসতঘরটি পুরোপুরি ভেঙে গেলে নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি। স্বামী-সন্তান হারানো এই বাক প্রতিবন্ধী নারীর পাশে দাঁড়ায় উপজেলা প্রশাসন। ইউএনও রাসেল ইকবাল নিজে ঘটনাস্থলে যান এবং তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষণা দেন নতুন ঘর নির্মাণের।

প্রায় এক মাসের ব্যবধানে দৃষ্টিনন্দন সেমিপাকা ঘরটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘরের চাবি জোহরা বেগমের হাতে তুলে দেন ইউএনও। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছাও জানানো হয়।

চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম রায়হানুর রহমান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগর হোসেন সৈকতসহ অনেকে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টি.আর) কর্মসূচির তৃতীয় পর্যায়ের আওতায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় ঘরটি।

স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জু বলেন, “বাক ও কর্মক্ষমতাহীন এই নারীকে ঘর উপহার দিয়ে ইউএনও স্যার যে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা এলাকাবাসীর হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। তাঁর প্রতি আমরা চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব।”

এ প্রসঙ্গে ইউএনও রাসেল ইকবাল বলেন, “জোহরা বেগমের কোনো স্বামী-সন্তান নেই, নেই কথা বলার শক্তিও। এ রকম একজন মানুষের কষ্ট দেখে তখনই সিদ্ধান্ত নেই—তাঁর জন্য ঘর নির্মাণ করব। এই ঘর শুধু আশ্রয় নয়, তাঁর পরিচয়, তাঁর নিরাপত্তা, তাঁর জীবনের নতুন ঠিকানা।”

উল্লেখ্য, এর আগেও আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের বারাংকুলা মধ্যপাড়ার বিধবা শাহিনুর বেগমের পুড়ে যাওয়া ঘরের জায়গায় ইউএনও রাসেল ইকবালের উদ্যোগে ‘জোনাকি’ নামক দৃষ্টিনন্দন সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করা হয়। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে সবকিছু হারানোর পর তিনি সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছিলেন। ইউএনওর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১৫ মার্চ ঘর নির্মাণ শুরু হয়ে ৩০ এপ্রিল তা হস্তান্তর করা হয়।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow