বাইপাইল-নরসিংহপুর সড়ক যেন জলপথ: দুর্ভোগে হাজারো মানুষ, নিস্তার নেই বৃষ্টিতেও

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইপাইল থেকে নরসিংহপুর পর্যন্ত মাত্র কয়েক কিলোমিটার পথ। কিন্তু এই স্বল্প দূরত্বের রাস্তা যেন এক দীর্ঘ দুর্ভোগের নাম। যেখানে রাস্তার বদলে চোখে পড়ে কাদা-পানিতে ভর্তি গর্ত, ভাঙাচোরা পিচঢালা আর উপচে থাকা ড্রেনের পানি। কোথাও হাঁটার উপায় নেই, কোথাও আবার পুরোপুরি ডুবে আছে রাস্তাটি। এক কথায়—এটা যে রাস্তা, না নদী—তা বোঝাই মুশকিল।
প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন হাজারো গার্মেন্টস শ্রমিক, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, রোগী ও জরুরি সেবার যানবাহন। বৃষ্টির দিনে অবস্থাটা হয়ে ওঠে আরও ভয়াবহ। কখনও বাস অর্ধেকটা গর্তে ঢুকে যায়, কখনও রিকশা উল্টে পড়ে পানিতে। অনেক সময় পথচারীদের বাধ্য হয়ে কাদা-মাটি ভেঙে হাঁটতে হয়, যার ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে চোখে পড়ার মতো কোনো পদক্ষেপ নেই।
এখানে প্রতিদিন ঘটে চলেছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। পানির নিচে লুকিয়ে থাকা গর্তে হোঁচট খেয়ে অনেকে পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছেন। ভারী যানবাহন আটকে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিচ্ছে ক্ষতি, স্কুল-কলেজে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানোও কঠিন হয়ে পড়েছে অনেক রোগীর জন্য।
স্থানীয় এক পরিবহন শ্রমিক বলেন, “মনে হয় নদীর উপর দিয়ে বাস চলছে। হঠাৎ করে পানির নিচে গর্তে পড়ে ঝাঁকি খেয়ে যাত্রীরা পড়ে যায়। কত মানুষ আহত হয়েছে, তার হিসাব নেই।” এ অবস্থা যেন প্রতিদিনকার চিত্রে পরিণত হয়েছে।
জনগণের প্রাণের দাবি, বাইপাইল-নরসিংহপুর সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে মেরামত ও পুনঃনির্মাণ করতে হবে। সেইসঙ্গে জলাবদ্ধতা রোধে স্থায়ী ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া, রাস্তার প্রতিটি গর্ত চিহ্নিত করে সেখানে নিরাপত্তা বেষ্টনী ও সতর্কতামূলক চিহ্ন বসানো প্রয়োজন।
এই রাস্তাটি শুধু একটি মহাসড়কের অংশ নয়—এটি দেশের অন্যতম প্রধান শিল্প এলাকা আশুলিয়ার জীবনরেখা। তাই এই দুরবস্থার দ্রুত সমাধান শুধু জনগণের দাবি নয়, বরং জাতীয় অগ্রগতির স্বার্থে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের অপরিহার্য কর্তব্য।
What's Your Reaction?






