নরসিংদীতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের সংঘর্ষে যুবক নিহত, আহত পুলিশসহ অর্ধশতাধিক

নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম (২৬) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বেলাব থানার ওসিসহ অন্তত ১০ পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ৯টার দিকে বেলাব ও চর বেলাব গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে সেনাবাহিনী, ডিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তাদের হস্তক্ষেপে বিকেলের দিকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। নিহত সাইফুল ইসলাম চর বেলাব গ্রামের জীবন মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম দফায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরপর সন্ধ্যায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে সাইড না দেওয়াকে কেন্দ্র করে নতুন করে কথা-কাটাকাটি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর জের ধরেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন সাইফুল ইসলাম। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় বেলাব বাজারের দিকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ তিন থেকে চার শতাধিক লোক অগ্রসর হলে পুলিশ বাধা দেয়। তখন তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় বেলাব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মাহবুব রহমানসহ অন্তত ১০-১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ, পরে টিয়ার শেল নিক্ষেপ এবং একপর্যায়ে শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মনজুর-ই-মুশাফকা ফেরদৌস বলেন, সাইফুল ইসলামকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহ জানান, দুই গ্রামের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত রয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। স্থানীয়দের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
What's Your Reaction?






