ঈদ-উল আজহা সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গবাদি পশুর সমাহার

পবিত্র ঈদ-উল আজহাকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৫টি গবাদি পশু। অথচ জেলার মোট চাহিদা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৮২৭টি। ফলে চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত রয়েছে ৮০৮টি গবাদি পশু। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও খামারে গরু বেচাকেনা শুরু হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট ১৪ হাজার ৭৯২টি খামার রয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছে সর্বোচ্চ ৪১৭১টি খামার। অন্যান্য উপজেলায় সরাইল ১২৭৫টি, আখাউড়া ৭৭৭টি, কসবা ২০৪৪টি, নাসিরনগর ১৬১৮টি, নবীনগর ১৭০৩টি, বাঞ্ছারামপুর ১২৮১টি, আশুগঞ্জ ১০২৭টি ও বিজয়নগরে রয়েছে ৮৯৬টি খামার। এসব খামারে লালন-পালন করা হচ্ছে ৫৮ হাজার ৮৯৪টি ষাঁড়, ২৩ হাজার ৪২৩টি বলদ, ১৭ হাজার ২৫০টি গাভী, ১২ হাজার ১৬৬টি মহিষ, ১৫ হাজার ৩২১টি ছাগল ও ৮ হাজার ৫৮১টি ভেড়া।
এ বছর জেলার বিভিন্ন স্থানে ১২১টি কোরবানির হাট বসানো হবে। শুধু খামার নয়, অনেক কৃষক পরিবারও নিজেরাই ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করে হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন।
সরেজমিনে খামার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ সামনে রেখে খামারগুলোতে ব্যস্ততা বেড়েছে। প্রতিটি খামারে কাজ করছেন ৮-১০ জন শ্রমিক। তারা পশুকে গোসল করানো, খাবার দেয়া, গোবর পরিষ্কারসহ নানা কাজে নিয়োজিত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের নয়নপুর এলাকার রূপচাঁদ বিবি ডেইরি খামারে দেখা গেছে শতাধিক দেশি জাতের গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। খামারের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, “গত বছর দেড় শতাধিক গরু পালন করেছিলাম, ৩০টি গরু অবিক্রীত ছিল। এবার সেই ৩০টি গরু ছাড়াও নতুন গরু মিলে শতাধিক গরু প্রস্তুত রয়েছে। গরুর খাবার, ঔষধ, পানি ও ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে খরচ বেড়েছে অনেক বেশি। আশা করছি এবার ভাল দাম পাব।”
সুহিলপুরের মনির ডেইরী খামারের মালিক মনির মিয়া জানান, “কোরবানির জন্য ৬০টি গরু পালন করেছি, এরমধ্যে ইতিমধ্যেই ১৫টি বিক্রি হয়ে গেছে। খামারে সর্বোচ্চ ৫ লাখ এবং সর্বনিম্ন দেড় লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে।”
জেলা ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও খান এগ্রো ডেইরি ফার্মের কর্ণধার ডা. মো. সাইফুদ্দিন খান শুভ্র বলেন, “গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গরুর মাংসের দামও বেড়েছে। দানাদার খাদ্যের পরিবর্তে ঘাস উৎপাদন বাড়ালে খরচ কমে যাবে। ভারত থেকে চোরাইপথে গরু আসা বন্ধ হলে দেশীয় খামারিরা লাভবান হবে।”
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুল ইসলাম বলেন, “এ বছর জেলার চাহিদার তুলনায় বেশি গবাদি পশু রয়েছে। ফলে পার্শ্ববর্তী জেলাতেও রপ্তানি সম্ভব। আশা করছি এবার জেলায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গবাদি পশু কেনাবেচা হবে।” তিনি আরও বলেন, “খামারের পাশাপাশি অসংখ্য কৃষক পরিবারও কোরবানির জন্য গবাদি পশু পালন করছেন। ইতিমধ্যেই জেলার হাটগুলোতে পশু কেনাবেচা শুরু হয়ে গেছে।”
What's Your Reaction?






