নওগাঁয় ৬ কোটি টাকার চামড়ার বাণিজ্য, লবণ খোলাবাজারে বিক্রির অভিযোগ

কোরবানির ঈদে নওগাঁয় এবার প্রায় ৬ কোটি টাকার চামড়া বাণিজ্য হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও সরকারের উদ্যোগে চামড়া সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অরাজকতা দেখা না গেলেও অভিযোগ উঠেছে—বিনামূল্যে দেওয়া লবণের একটি অংশ খোলাবাজারে বিক্রি হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানিয়েছেন, এবার জেলার ১১টি উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে ৭৪ টন লবণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। যার ফলে চামড়া নষ্ট হয়নি, বরং ৫-৬ কোটি টাকার চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঈদের আগে একাধিক সভা এবং সচেতনতামূলক প্রচারণাও চালানো হয়।
তবে চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারি লবণ সঠিক হাতে না পৌঁছানোয় কিছু অংশ বিক্রি হয়ে গেছে। নওগাঁ চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী জানান, ‘যেসব প্রতিষ্ঠানে লবণ দেওয়া হয়েছে, তারা অধিকাংশই জানে না চামড়া কীভাবে সংরক্ষণ করতে হয়। তাই লবণগুলো খোলাবাজারে বিক্রি হয়েছে।’
এদিকে নওগাঁ জেলায় এবার প্রায় ৩ লাখ ৭৮ হাজার গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। এর মধ্যে অনেক গরু ল্যাম্পিস্কিন রোগে আক্রান্ত ছিল বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ফলে এমন দাগযুক্ত চামড়া কেজি দরে বিক্রি করতে হয়েছে, যা আগের তুলনায় বেশ কম। ছাগলের চামড়া তো একেবারেই বাজারে চাহিদাহীন। ব্যবসায়ীদের মতে, লবণের দাম বৃদ্ধি ও শ্রমিক সংকটে ক্ষুদ্র চামড়া সংরক্ষণ সম্ভব হয়নি।
রাণীনগরের ফড়িয়া ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘চামড়া কিনে লাভের আশায় মাঠে নেমে এবারও লোকসান গুনতে হলো। তবে মধ্যসত্বভোগীদের দৌরাত্ম কিছুটা কমেছে।’ ব্যবসায়ীরা জানান, ছাগলের চামড়া ১০ থেকে ১০০ টাকা দরে কেনা হয়েছে।
চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি মো. মমতাজ হোসেন বলেন, ‘যদি কোম্পানিগুলো নগদে চামড়া কেনে এবং সরকার সারা বছর চামড়া শিল্প তদারকি করে তাহলে এই খাত আবার ঘুরে দাঁড়াবে।’ তিনি দুর্নীতির সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ারও দাবি জানান।
অন্যদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় চামড়া পাচার ঠেকাতেও কঠোর নজরদারি রয়েছে।
What's Your Reaction?






