বনজ ফলের রাজ্যে আমের ঝলক, পাহাড়ি কৃষকের বাগানে রঙিন সাফল্য

রঙবে রঙে, টসটসে রসালো আমে ছেয়ে গেছে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার ওয়াগায় পাড়ার পাহাড়ি বাগান। শখের বসে গড়ে তোলা এই বাগানটি এখন পরিণত হয়েছে ফলের রাজ্যে। পাহাড়ি কৃষক মাওসেতুং তঞ্চঙ্গ্যার ১০ একর জমির এই বাগানে চলতি মৌসুমে আমের বাম্পার ফলনে চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে।
বাগানে রয়েছে দেশি-বেদেশি ১৮ জাতের আম গাছ। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য— আম্রপালি, রাংগৈ, সূর্যডিম, সেমাই, রেফ লেডি, বেনানা, রেড ফার্মা, কিংস চাপা পাত, কিউজাই ও বাড়িফুল। প্রতি গাছে ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে এখন হাসি ফুটেছে। আম ছাড়াও রয়েছে লিচু, কমলা, আনারস, তেঁতুল, জাম্বুরা, মাল্টা, পেয়ারা, কলা, লটকন, লেবু এবং বড়ইসহ প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার মিশ্র ফলের গাছ।
মাওসেতুং তঞ্চঙ্গ্যা জানান, “প্রায় ১৫ বছর আগে এখানে সেগুন বাগান করেছিলাম। কিন্তু আয় আসতে সময় লাগছিল। পরে সেগুন বিক্রি করে ফলের বাগান করেছি। এখন মনে হয় সারাক্ষণ বাগানেই থাকি।”
তিনি বলেন, “এই প্রথম এত ফলন হয়েছে। বাগানে এখন রসালো আমে ভরপুর। দেশের বিভিন্ন স্থানে এই বিষমুক্ত আমের চাহিদা অনেক। দুই সপ্তাহের মধ্যে আম সংগ্রহ শুরু হবে। অনেক জাতের আম খুচরা বাজারে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে পারে।”
তবে বাগানে সরকারি কোনো সহায়তা না পাওয়ার হতাশাও প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “সব নিজের চেষ্টায় করেছি। কৃষি অফিস থেকেও কেউ খোঁজ নেয়নি।”
এ বিষয়ে রোয়াংছড়ি উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুসিং মারমা বলেন, “আমি মাঝে মাঝে গিয়ে বাগান দেখি এবং পরামর্শ দেই। তবে আমার হাতে ক্ষমতা সীমিত। তারপরও ফিলিপাইন জাতের ৬০০ আনারসের চারা দিয়েছি।”
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. এহসানুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাহাড়ের অনুকূল পরিবেশ, কৃষকের যত্ন এবং বৈচিত্র্যময় জাতের সমন্বয়ে গড়ে উঠা এ ধরনের বাগান পাহাড়ি অর্থনীতির সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। এখন প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও বাজারজাতকরণের সহযোগিতা।
What's Your Reaction?






