শেষ মুহূর্তে পিরোজপুরে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট

কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসতেই জমে উঠেছে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার পশুর হাট। শেষ মুহূর্তে ভিড় বেড়েছে হাটগুলোতে। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এবার পশুর সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় গত বছরের তুলনায় দাম কিছুটা কম। এতে খুশি ক্রেতারা। ইতোমধ্যে উপজেলার তিনটি কোরবানির হাটে বেচাকেনা পুরোদমে চলছে।
জানা গেছে, এ বছর নাজিরপুরে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪ হাজার গরু, ৩ হাজারের বেশি ছাগল এবং ৩৪টি মহিষ। হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে।
গরু খামারি সোহাগ মোল্লা, পাইকারি ব্যবসায়ী রেজাউল ফরাজী, আজিজুল শিকদার ও কৃষক ছাব্বির হাজরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার গরু ও ছাগলের দাম কিছুটা কম। তারা বলেন, “গত বছর যেসব ষাঁড় এক লাখ থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল, সেই একই ওজনের ষাঁড় এবার ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকায় কেনার প্রস্তাব দিচ্ছেন ক্রেতারা।”
একই ধারা ছাগলের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, “বড় ছাগল যেগুলো গত বছর ১৫-১৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেগুলো এবার ১০-১২ হাজার টাকায় কেনার আগ্রহ দেখাচ্ছেন ক্রেতারা।”
বিক্রেতাদের দাবি, প্রথমদিকে হাটে কোরবানি দেওয়ার মতো ক্রেতা কিছুটা কম থাকায় দাম তুলনামূলক কম। বর্তমানে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকার গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ছাগলের ক্ষেত্রে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার ছাগলেই আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে ঈদের আগের হাটগুলোতে দাম কিছুটা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা।
ক্রেতারাও সাশ্রয়ী দামে পশু কিনে সন্তোষ প্রকাশ করছেন। গরু ক্রেতা হোসেন আলী বলেন, “আমি এক লাখ ২০ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছি। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি দিতে চাই। পশুটি এখন লালনপালন করছি।” ছাগল ক্রেতা মনিরুজ্জামান বলেন, “১২ হাজার টাকায় একটি ছাগল কিনেছি, যা গত বছরের চেয়ে কম দামে পেয়েছি। এই দাম থাকলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।”
নাজিরপুর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আল মুক্তাদির রাব্বী জানান, “এখানে খামার ও গৃহস্থালি বাড়িতে লালনপালিত গরুগুলো প্রাকৃতিক খাবারে বড় করা হয়েছে। তবুও গরু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর কিছু ব্যবহৃত হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি হাটে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।”
তিনি আরও বলেন, “নাজিরপুর থানাটা ছোট হলেও এখানকার গরুর মান অনেক ভালো। পাশের দেশ থেকে অবৈধ পথে গরু প্রবেশ ঠেকাতে কঠোর নজরদারি চলছে।”
নাজিরপুর থানা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, “জাল টাকা প্রতিরোধসহ হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে। সড়ক ও হাটে নিরবচ্ছিন্ন নজরদারি করা হচ্ছে। আশা করছি, এবারও ঈদ উৎসব সুন্দরভাবে উদ্যাপন হবে।”
What's Your Reaction?






