লামায় কেন্দ্রীয় তাবলীগ মার্কাজ নিয়ে দখল ও আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ

লামা পৌর শহরে কেন্দ্রীয় তাবলীগি মার্কাজ ও এর অন্তর্গত দারুল উলুম বাবুস সালাম মাদ্রাসা নিয়ে একটি চক্রের দখল ও নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মার্কাজ কমপ্লেক্সের শিক্ষা ও ধর্মীয় কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টির অভিযোগও পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগে বলা হয়, একটি সুবিধাবাদী চক্র তাবলীগি মার্কাজ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্সে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পায়তারা চালাচ্ছে। বিগত সরকারের সময়ে আওয়ামী লীগ ও ওলামা লীগের নেতা পরিচয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণকারী এই গোষ্ঠী বর্তমানে মার্কাজ দখলের নীল নকশায় লিপ্ত।
মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আতাউল্লাহ আল মুজাহিদ জানান, লামা কেন্দ্রীয় তাবলীগি মার্কাজ ও এর আওতাধীন মাদ্রাসাটি ০.৫৩ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত। সরকারি অর্থায়নে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদ, মাদ্রাসা ও সড়ক অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। দাতাদের অনুদান ও স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষের সহায়তায় এই প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ২০২২ সাল থেকে মাদ্রাসার কার্যক্রম চালু হয়, এবং পরবর্তীতে এর নাম পরিবর্তন করে বর্তমানে ‘দারুল উলুম বাবুস সালাম মাদ্রাসা’ রাখা হয়।
মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি রমিজ উদ্দীনের অভিযোগ, লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাফেজ মোঃ শোয়াইব, উম্মাহাতুল মুমিনীন মহিলা মাদ্রাসার পরিচালক মোঃ ইউনুছসহ একাধিক ব্যক্তি এই চক্রে জড়িত। তাদের সঙ্গে রয়েছেন দারুল কাউছার মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক মাওলানা আজিজুল ইসলাম, শিক্ষক মাওলানা মনোয়ার ও হিসাবরক্ষক মাওলানা জাহিদুল ইসলাম।
আরেকটি অভিযোগে বলা হয়েছে, এই গোষ্ঠী বিগত সরকারের আমলে নিজেদের ‘ওলামালীগ নেতা’ পরিচয়ে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা নিয়েছে। সরকারি ‘জিআর’ খাতের খাদ্যশস্যও আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পর কিছুদিন নিস্ক্রিয় থাকলেও, বর্তমানে তারা ফের সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগও উঠেছে।
তবে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন দাতা মোহাম্মদ হোসাইন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।” অন্য অভিযুক্তদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে লামা থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “মার্কাজ কমপ্লেক্সে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। অপরাধী যেই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
What's Your Reaction?






