সুংসুংপাড়ায় সেনাবাহিনীর উদ্যোগে বড়দিন ও নববর্ষ উদযাপন: প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও সম্প্রীতি সভা অনুষ্ঠিত
বান্দরবানের সুংসুংপাড়ায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন এবং আসন্ন ইংরেজি নতুন বছর উপলক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ১৬ ই বেঙ্গলের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা সুংসুংপাড়া আর্মি ক্যাম্পের উদ্যোগে এই উৎসবমুখর আয়োজন সম্পন্ন হয়।
আয়োজকরা জানান, বিগত দুই বছর কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর অত্যাচার ও নিপীড়নের কারণে এই এলাকার পাড়াবাসীরা বড়দিন ও নতুন বছরের উৎসব পালন করতে পারেননি। তবে এ বছর স্থানীয়দের মধ্যে উৎসবের আমেজ ফিরিয়ে আনতে এবং আনন্দঘন পরিবেশে দিনটি উদযাপনের লক্ষ্যে সেনাবাহিনী এই উদ্যোগ গ্রহণ করে।
দিনের শুরুতে সুংসুংপাড়া আর্মি ক্যাম্প বনাম সুংসুংপাড়া এলাকাবাসীর মধ্যে একটি প্রাণবন্ত ও প্রতিযোগিতামূলক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় উভয় দলই চমৎকার নৈপুণ্য প্রদর্শন করে। নির্ধারিত সময় শেষে সুংসুংপাড়া আর্মি ক্যাম্প দলকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সুংসুংপাড়াবাসী দল বিজয়ী হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ১৬ ই বেঙ্গলের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সৈয়দ আতিকুল করিম, পিএসসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুংসুংপাড়া সাবজোন কমান্ডার মেজর মুহাঃ আরাফাত রোকনী। এছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বিপুল সংখ্যক পাড়াবাসী খেলাটি উপভোগ করেন। খেলা শেষে প্রধান অতিথি বিজয়ী ও রানার্স-আপ দলের মাঝে মেডেল ও পুরস্কার বিতরণ করেন। এ সময় তিনি খেলাধুলার মাধ্যমে সেনাবাহিনী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দিনের দ্বিতীয় অংশে পুরাতন রুমানা পাড়া, নতুন রুমানা পাড়া এবং দার্জিলিং পাড়াবাসীদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ১৬ ই বেঙ্গলের অধিনায়ক স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মানের খোঁজখবর নেন এবং তাদের বিভিন্ন সমস্যা, চাহিদা ও মতামত মনোযোগ সহকারে শোনেন।
মতবিনিময়কালে পাড়া কারবারি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সেনাবাহিনীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা বলেন, “সুংসুংপাড়া আর্মি ক্যাম্পের সেনাসদস্যদের আন্তরিকতায় আমরা নিজেদের নিরাপদ ও আশ্বস্ত বোধ করি। খেলাধুলা ও সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সেনাবাহিনী আমাদের যুবসমাজকে ইতিবাচক ও শৃঙ্খল পথে পরিচালিত করছে।”
তারা আরও উল্লেখ করেন যে, সেনাবাহিনীর মানবিক কার্যক্রম ও উন্নয়নমূলক উদ্যোগ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সাথে পারস্পরিক আস্থা, সহযোগিতা ও সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ভবিষ্যতেও এ ধরনের জনকল্যাণমূলক ও সামাজিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে ‘দি ম্যাজেস্টিক টাইগার্স’-এর অধিনায়কের পক্ষ থেকে আশ্বাস প্রদান করা হয়। সেনাবাহিনীর এমন উদ্যোগে পাহাড়ি এলাকার সাধারণ জনগণের সাথে পারস্পরিক আস্থা ও সম্প্রীতি আরও জোরদার হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
What's Your Reaction?
অনুপম মারমা, থানচি প্রতিনিধি, বান্দরবানঃ