শ্রীনগরে প্রেমিককে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগে মা-মেয়ে গ্রেপ্তার

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় প্রেমিককে প্রেমের ফাঁদে ফেলে শরবত ও মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হত্যার অভিযোগে এক কিশোরী ও তার মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৩১ মে) দিবাগত রাত ৩টার দিকে অভিযান চালিয়ে পশ্চিম দেউলভোগ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
নিহত তরুণের নাম ইব্রাহিম ওরফে রাফি (২০)। তিনি শ্রীনগরের সেলামতি বানিয়াবাড়ী এলাকার শাজাহান মোড়লের ছেলে এবং শ্রীনগর বাজারের একটি কাপড়ের দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কের আড়ালে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য কৌশলে ফাঁদ পেতে হত্যা করা হয়েছে ইব্রাহিমকে। গত মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে প্রেমিকার মায়ের বাড়িতে শরবত ও মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় তাকে। এরপর তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার (৩০ মে) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
শনিবার রাতে নিহত ইব্রাহিমের বাবা শাজাহান মোড়ল শ্রীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পশ্চিম দেউলভোগ এলাকা থেকে ময়না বেগম (৪৫) ও তার ১৬ বছরের মেয়েকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ময়না বেগমের মেয়ের সঙ্গে ইব্রাহিমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল প্রায় দুই বছর ধরে। এ সময় বিভিন্ন কৌশলে ইব্রাহিমের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। তিন-চার মাস আগে তার কাছ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা নেওয়ার পাশাপাশি ব্র্যাক এনজিও থেকে ৪০ হাজার টাকার ঋণও তোলা হয়। ঋণ ময়নার পরিবার পরিশোধ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আর শোধ করেনি।
এই টাকা নিয়ে ইব্রাহিম ও তার প্রেমিকার মধ্যে একাধিকবার ঝগড়া হয়। এরই একপর্যায়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তাকে বিষ দিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের।
নিহতের বোন স্মৃতি বলেন, “আমার ভাইয়ের সরলতা আর ভালোবাসাকে ব্যবহার করে তারা টাকা নিয়েছে। যখন ভাইটি টাকা ফেরত চাইলো, তখনই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করল। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।”
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিল আহমেদ জানান, “শনিবার রাত ২টার দিকে মামলা হওয়ার পর অভিযুক্ত মা-মেয়েকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার আদালতে পাঠানো হলে তাদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। বর্তমানে তারা জেলহাজতে রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
What's Your Reaction?






