ভুয়া মেজর সেজে দুই বিয়ে, লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ

কখনও সেনাবাহিনীর মেজর, আবার কখনও গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর কর্মকর্তা—এমন ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় প্রতারণার এক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন ধুরন্ধর এক যুবক। চাকরি দেওয়া ও বিয়ের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া সেই প্রতারক সোহেল হাওলাদারকে অবশেষে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে মঠবাড়িয়া থানার পুলিশ উপজেলার বকসীর ঘটিচোরা গ্রামে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে সোহেলকে আটক করে। আটক ২৭ বছর বয়সী সোহেল পটুয়াখালী সদর উপজেলার বাদেরপুর গ্রামের আব্দুল বারেক হাওলাদারের ছেলে।
থানা পুলিশ জানায়, এই প্রতারকের কর্মকাণ্ড ছিল সিনেমার গল্পের মতো। পাঁচ মাস আগে সোহেল নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দিয়ে মঠবাড়িয়ার গুলিশাখালী গ্রামের ২৩ বছর বয়সী ফারজানা আক্তারকে বিয়ে করেন। এরপর সেনাবাহিনীর লোগো লাগানো মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকায় দাপটের সঙ্গে চলাফেরা শুরু করেন এবং একই পরিচয়ের ফাঁদে ফেলে বকসীর ঘটিচোরা গ্রামে আরও একটি বিয়ে করেন।
তার প্রতারণার শিকার হন উপজেলার সবুজ নগর গ্রামের গৃহবধূ হাসি রানী দাস। তার স্বামীকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে সোহেল ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। চাকরির আশায় ওই গৃহবধূ সরল বিশ্বাসে প্রথমে তাকে ১৫ হাজার টাকা দেন। কিন্তু এরপরই সোহেল টালবাহানা শুরু করলে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন শুরু হয়। ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে, তিনি আরও অন্তত ছয় থেকে সাতজনের কাছ থেকে একইভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
প্রতারণার শিকার গৃহবধূ হাসি রানীর অভিযোগের ভিত্তিতে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ তদন্তে নামে এবং বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়দের সহায়তায় প্রতারক সোহেলকে আটক করে।
মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, আটক যুবক সেনাবাহিনী বা ডিজিএফআইয়ের কোনো সদস্য নন। তিনি একজন পেশাদার প্রতারক। এ ঘটনায় হাসি রানী বাদী হয়ে একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেছেন এবং আটক সোহেলকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
What's Your Reaction?






