নোয়াখালীতে মহাত্মা গান্ধীর ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের উদ্যোগে মহাত্মা গান্ধীর ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী ও আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস-২০২৫ উদযাপিত হয়েছে। রবিবার (৫ অক্টোবর) জয়াগस्थित গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয়ে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সম্প্রীতি সমাবেশ, মতবিনিময় সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকালে ট্রাস্টের সচিব রাহা নব কুমার অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে গান্ধীর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জীবন কানাই দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় "অহিংসার মাধ্যমে বিশ্ব সংহতি গড়ে তোলা" (Fostering Global Solidarity Through Non-Violence) শীর্ষক ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন সহকারী পরিচালক অসীম কুমার বকসী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জীবন কানাই দাস বলেন, "মহাত্মা গান্ধীর অহিংসার আদর্শ বিশ্বশান্তির জন্য আজও প্রাসঙ্গিক। সহিংসতা, উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা এবং বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য তাঁর দর্শন আমাদের পথ দেখায়।" তিনি আরও বলেন, মার্টিন লুথার কিং এবং নেলসন ম্যান্ডেলার মতো বিশ্ব নেতারাও গান্ধীর অহিংস নীতি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছরিন আকতার, রামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ দিদারুল ইসলাম এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ব্রজ কিশোর সাহা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ এবং সামাজিক বৈষম্য ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এই সংকট মোকাবেলায় গান্ধীর অহিংসা ও সম্প্রীতির দর্শন অত্যন্ত জরুরি। তারা বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে সৃষ্ট সহিংসতা মোকাবেলায় গান্ধীর আদর্শ অনুসরণ করা প্রয়োজন।
বক্তারা আরও উল্লেখ করেন যে, মহাত্মা গান্ধী নোবেল শান্তি পুরস্কার না পেলেও, তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দালাইলামা, বারাক ওবামা এবং কৈলাশ সত্যার্থীর মতো ব্যক্তিত্বরা এই পুরস্কার পেয়েছেন। এটি প্রমাণ করে যে তার দর্শন বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে মানবাধিকার কর্মী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ১৫০ জন নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। শেষে, গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের থিয়েটার ইউনিট এবং গান্ধী মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
What's Your Reaction?






