বালিয়াকান্দিতে গৃহবধূ নিখোঁজ: ষড়যন্ত্রের অভিযোগ পরিবারের
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে মোছাঃ রেনু বেগম (৫০) নামে এক গৃহবধূ দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তার সন্ধান চেয়ে স্বামী ও তিন সন্তান একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। পরিবারের অভিযোগ, একটি অপহরণ মামলার সাক্ষী হওয়ায় প্রতিপক্ষের লোকজন রেনু বেগমকে আটকে রেখে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
সোমবার দুপুরে বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের বেতেঙ্গা গ্রামে নিজ বাড়িতে এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নিখোঁজ রেনু বেগমের স্বামী মোঃ বাবলু শেখ এবং তাদের সন্তান লিটন শেখ, বন্যা ও মেঘলা উপস্থিত ছিলেন।
স্বামী মোঃ বাবলু শেখ জানান, তার স্ত্রী রেনু বেগম এর আগেও বেশ কয়েকবার বাড়ি থেকে চলে গেলেও কিছুদিন পর আবার ফিরে আসতেন। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। বাবলু শেখ বলেন, সম্প্রতি তার ভাগ্নিকে অপহরণের একটি ঘটনা ঘটে, যেখানে স্থানীয় মনোয়ারের ভাই শাকিল জড়িত। ওই অপহরণ মামলায় তিনি ও তার ছেলে সাক্ষী। এই ঘটনার পর থেকেই মনোয়ার ও তার লোকজন তাদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। বাবলু শেখের ধারণা, এই হুমকির অংশ হিসেবেই তার স্ত্রীকে কোথাও আটকে রেখে মনোয়ার এখন তার শাশুড়িকে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করার চেষ্টা করছে।
রেনু বেগমের ছেলে মোঃ লিটন শেখ বলেন, "আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি, মা মাঝে মাঝে বাড়ি থেকে চলে যান আবার ফিরে আসেন। গত ১ জুলাই তিনি বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না বলে চলে যাওয়ার পর আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করি। কোনো সন্ধান না পেয়ে গত ২৫ আগস্ট বালিয়াকান্দি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি।" তিনি আরও যোগ করেন, "আমার চাচাতো বোনকে অপহরণের মামলায় সাক্ষী হওয়ার পর থেকেই আমার নানিকে ভুল বুঝিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হচ্ছে।"
মেয়ে বন্যা বলেন, মায়ের নিখোঁজ হওয়ার কারণে বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তাকে বাবার বাড়িতে এসে থাকতে হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, তার নানি তাদের বাড়িতে না এসে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তারা তাদের মাকে খুঁজে পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি থানার এসআই আকবর বলেন, বাবলু শেখ ও তার ছেলে লিটন একটি স্কুলছাত্রী অপহরণ মামলার সাক্ষী। রেনু বেগমের নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি হয়েছে, আবার তাদের বিরুদ্ধে রেনু বেগমের মা একটি অভিযোগও দিয়েছেন। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ জামাল উদ্দিন বলেন, "এই বিষয়ে পুলিশি তদন্ত চলছে। তদন্তের মাধ্যমেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে এবং কেউ অপরাধী প্রমাণিত হলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।"
What's Your Reaction?
মোঃ আজমল হোসেন, বালিয়াকান্দি রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ