৫ বছর ধরে একই কর্মস্থলে মৎস্য কর্মকর্তা

আজমল হোসেন, বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি, রাজবাড়ীঃ
Sep 12, 2025 - 13:39
 0  2
৫ বছর ধরে একই কর্মস্থলে মৎস্য কর্মকর্তা

নিয়মকানুন উপেক্ষা করে একই কর্মস্থলে টানা পাঁচ বছর ধরে বহাল রয়েছেন রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু বকর সিদ্দিক। শুধু তাই নয়, সরকারি বরাদ্দকৃত বাজেটের সঠিক হিসাব দিতে গড়িমসির অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর কালুখালী উপজেলায় যোগদান করেন আবু বকর সিদ্দিক। এরপর থেকেই দেশীয় মৎস্য সম্পদ রক্ষা, অবৈধ জাল বিনষ্টকরণ, নিয়মিত বাজার তদারকি, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচী, মা ইলিশ রক্ষা অভিযান এবং জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপনে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে স্থানীয় এক সাংবাদিক গত ১ জুলাই তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন। আবেদনপত্রে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচী এবং জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন বাবদ বরাদ্দ ও ব্যয়ের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়।

কিন্তু দীর্ঘদিন টালবাহানা করে চলতি বছরের ৭ আগস্ট তথ্য সরবরাহ করেন মৎস্য কর্মকর্তা। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপনের জন্য বরাদ্দ যথাক্রমে ৬০ হাজার ও ৬৫ হাজার টাকা। তথ্য অনুযায়ী, উভয় বছরেই বরাদ্দকৃত পুরো অর্থই খরচ হয়েছে।

জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচীর জন্য ২০২৩ ও ২০২৪ সালে তিনি ৭৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দ পান এবং প্রাপ্ত অর্থ পুরোপুরি ব্যয় করেছেন বলে দেখানো হয়েছে।

মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের বরাদ্দ ছিল ২০২৩ সালে ৫০ হাজার এবং ২০২৪ সালে ৪০ হাজার টাকা। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, উভয় বছরেই বরাদ্দকৃত অর্থ সম্পূর্ণ খরচ হয়েছে।

তবে কোন কার্যক্রমে কত টাকা খরচ হয়েছে—এর বিস্তারিত তথ্য তিনি দিতে পারেননি।

স্থানীয়রা বলেন, সরকারি বিধি অনুযায়ী একজন কর্মকর্তার একই কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি থাকার নিয়ম নেই। কিন্তু আবু বকর সিদ্দিক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ‘ম্যানেজ’ করে পাঁচ বছর ধরে কালুখালীতে বহাল রয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু বকর সিদ্দিক বলেন,
“আমি যা বরাদ্দ পেয়েছি, তার সবই খরচ করেছি। কোন খাতে কত খরচ হয়েছে তা আপনাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের অডিট হয়, তারা তা দেখবে।”

অন্যদিকে, কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহুয়া আফরোজ বলেন, “তথ্য জানার অধিকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের রয়েছে। মৎস্য কর্মকর্তা অবশ্যই চাহিদামতো বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতায় আছেন। কেন তিনি তা দেননি, সেটি বোধগম্য নয়।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow