শিশু ধর্ষণের ক্ষত ঢাকতে টাকার খেলা, ফেঁসে গেলেন বিএনপি নেতা

পিরোজপুরের নেছারাবাদে ১১ বছরের এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের এক পৈশাচিক ঘটনা ঘটেছে। তবে এই বর্বরতাকেও ছাপিয়ে গেছে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার এক ন্যাক্কারজনক প্রচেষ্টা। স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি আপস-মীমাংসার নামে ধর্ষকের পরিবার থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত ধর্ষক মোঃ মনির হোসেন ফরাজীকে (৫২) গ্রেফতার করেছে। আর মীমাংসার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. মনজুরুল কবিরের বিরুদ্ধে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চামি মুসলিমীয়া দাখিল মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুটি শনিবার (২৬ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বাড়ির পাশে অভিযুক্ত মনির ফরাজীর দোকানে খাবার কিনতে যায়। এসময় মনির খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে দোকানের ভেতরে নিয়ে শাটার নামিয়ে দেয় এবং জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
ঘটনাটি জানাজানি হলে তাৎক্ষণিকভাবে আপস-মীমাংসার নামে രംഗে নামেন স্থানীয় বিএনপি নেতা মনজুরুল কবির। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ধর্ষক মনিরকে মারধর করে চাপ সৃষ্টি করেন এবং মীমাংসার কথা বলে তার পরিবারের কাছ থেকে এক লাখ টাকা আদায় করেন। কিন্তু সেই টাকা নির্যাতিত শিশুটির পরিবারকে না দিয়ে তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই ওয়ার্ডের গ্রাম চৌকিদার মো. সজিব মাঝি।
ধর্ষকের মা মাহাফুজা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, "আমার ছেলে একটু অপরাধ করেছে বলে বিএনপি নেতা মনজুরুল আমার ছেলেকে অনেক মেরেছে। চৌকিদার সজিবের মাধ্যমে আমরা তাকে এক লাখ টাকাও দিয়েছি। টাকা দেওয়ার পরও কেন আমার ছেলের নামে মামলা হলো, তাকে জেলে পাঠানো হলো? আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই।"
এ বিষয়ে গ্রাম চৌকিদার সজীব মাঝি বলেন, "আমি নিজের হাতে টাকা নেইনি। বিএনপি নেতা মনজুরুল কবির নিজেই টাকা নিয়েছেন। তবে মামলা হওয়ার পর তিনি টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে শুনেছি।"
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা মনজুরুল কবির বলেন, "আমি কোনো টাকা নিইনি। কারা টাকা নিয়েছে আমি জানি না। একটা সালিশে গেলে অনেকেই অনেক কথা বলে।"
নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বনি আমিন জানান, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং অভিযুক্ত মনির ফরাজীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। নির্যাতিত শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পিরোজপুর সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে। টাকা আত্মসাতের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
What's Your Reaction?






