আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের বাতিঘর সাহসী কলম সৈনিক সাংবাদিক সাঈদ খান

জালিস মাহমুদ, স্টাফ রিপোর্টারঃ
Jul 28, 2025 - 15:10
 0  18
আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের বাতিঘর সাহসী কলম সৈনিক সাংবাদিক সাঈদ খান

২০২৪ সালের সেই অগ্নিগর্ভ দিনগুলোতে যখন রাজপথ ভেসেছিল রক্তে, আর ভয়ের চাদরে ঢেকে গিয়েছিল পুরো দেশ, তখন কিছু কলম গর্জে উঠেছিল সত্যের পক্ষে। সেই অকুতোভয় কণ্ঠস্বরগুলোর মধ্যে অন্যতম এক যোদ্ধা এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধের বাতিঘর হয়ে ওঠা সাংবাদিক সাঈদ খান। যিনি নির্যাতন, জেল-জুলুম সহ্য করেও সত্যের পথ থেকে একচুলও বিচ্যুত হননি; বরং হয়ে উঠেছেন নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকদের প্রেরণার উৎস এবং এক জীবন্ত কিংবদন্তি।

ছাত্র-জনতার সেই ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে যখন অনেক গণমাধ্যমই রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে দ্বিধান্বিত ছিল, তখন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান তার কলমকে বানিয়েছিলেন প্রতিবাদের প্রধান অস্ত্র। তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রলীগ ও পুলিশের বর্বরতা, সরকারের দমন-পীড়ন আর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কালো অধ্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তার লেখনী ও কণ্ঠস্বর বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছিল ফ্যাসিবাদের আসল চেহারা।

সত্য বলার এই ‘অপরাধে’ চরম মূল্য দিতে হয়েছিল তাকে। ২০২৪ সালের ২৫শে জুলাই, মধ্যরাতের আঁধারে মগবাজারের বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকের বাহিনী। চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। তার কণ্ঠকে চিরতরে থামিয়ে দেওয়ার জন্য দেওয়া হয় মেট্রোরেল অগ্নিসংযোগের মতো বানোয়াট মামলা, রিমান্ডের নামে চলে পাশবিক নিপীড়ন। এই ঘটনায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো তীব্র নিন্দা জানায়। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন সেসময় এক বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়েছিল, "আন্দোলনের প্রকৃত ঘটনা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার জন্যই সাঈদ খানকে এই নির্মম শাস্তি দেওয়া হয়েছে।"

কিন্তু কারাগারের দেয়াল কিংবা নিপীড়নের যন্ত্রণা—কোনো কিছুই দমাতে পারেনি সেই অদম্য চেতনাকে। ৫ই আগস্ট পট পরিবর্তনের পর জেল থেকে বেরিয়ে তিনি দ্বিগুণ শক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সংগ্রামে। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে দেশপ্রেমের যে চেতনা তিনি হৃদয়ে লালন করেন, তা প্রতিফলিত হচ্ছে তার প্রতিটি কাজে। দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমে তার ক্ষুরধার কলাম, টকশোতে তার নির্ভীক বিচরণ আর অনলাইন-অফলাইনে তার সরব উপস্থিতি জানান দিচ্ছে—সত্যের লড়াই থামবার নয়।

সাঈদ খান আজ তাই শুধু একজন ব্যক্তি নন—তিনি একটি আদর্শ, নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের এক জীবন্ত প্রতীক। তিনি প্রমাণ করেছেন, সাংবাদিকতা কেবল একটি পেশা নয়, বরং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এক শক্তিশালী দুর্গ। তার ত্যাগ, নিষ্ঠা ও সাহসিকতা আজ হাজারো মুক্তিকামী মানুষের হৃদয়ে তাকে গণতন্ত্রের এক অকুতোভয় যোদ্ধা হিসেবে আসীন করেছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow