ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানা চত্বরেই যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার ধুন্ধুমার

কবির হোসেন, আলফাডাঙ্গা প্রতিনিধি, ফরিদপুরঃ
Sep 10, 2025 - 12:01
 0  26
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানা চত্বরেই যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার ধুন্ধুমার

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় জমি সংক্রান্ত একটি সালিশি বৈঠককে কেন্দ্র করে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে প্রকাশ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আলফাডাঙ্গা থানার ফটকের সামনে এই অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাটিগ্রাম এলাকার একটি জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ মীমাংসার জন্য আলফাডাঙ্গা থানার গোলঘরে একটি সালিশের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে দুই পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শাহিন মোল্যা এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম দাউদ।

সালিশ চলাকালীন সময়ে দুই নেতার মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এরপর তারা থানার বাইরে এলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। একপর্যায়ে যুবদল নেতা শাহিন মোল্যা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কামরুল ইসলাম দাউদকে আঘাত করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয়ে যায় হইচই, চেঁচামেচি, হুমকি হাঙ্কিসহ একপর্যায় কামরুল এবং তার সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন শাহিনকে কিল-ঘুষি ও চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে শাহিন দৌড়ে থানার ভেতরে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং শাহিনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়।

এ বিষয়ে কামরুল ইসলাম দাউদ বলেন, "আমি আমার এলাকার মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে সালিশে ছিলাম। কিন্তু শাহিন মোল্যা অন্য ইউনিয়নের লোক হয়েও আমাকে 'দালাল' বলে আখ্যা দিয়ে অহেতুক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছেন।"

অন্যদিকে শাহিন মোল্যা দাবি করেন, "বিএনপির নাম ব্যবহার করে দাউদসহ কিছু বহিরাগত দুষ্কৃতিকারী আমার ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছেন। তারা আসলে বিএনপির কেউ না। পুলিশ আমাকে দ্রুত উদ্ধার করায় আমি প্রাণে বেঁচে গেছি।"

তবে, সালিশে উপস্থিত থাকা আলফাডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সমীর বিশ্বাস জানান, থানার ভেতরে কোনো মারামারি হয়নি এবং সালিশ সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, "থানার বাইরে কিছু অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। যারা মারামারিতে জড়িয়েছেন, তারা জমির প্রকৃত মালিকদের কেউ নন।"

আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহজালাল আলম জানান, এই ঘটনায় তার কাছে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি এবং কে বা কারা মারামারি করেছে, তাও তিনি জানেন না।

এই ঘটনায় স্থানীয় রাজনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এটি কি রাজনৈতিক কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ, নাকি নিছকই ব্যক্তিগত বিবাদ - এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow