নাজিরপুরে ঈদুল আযহা সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা

ঈদুল আযহা যতই ঘনিয়ে আসছে, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার কামার পল্লীগুলো ততই হয়ে উঠেছে কর্মচঞ্চল। কুরবানির ঈদকে ঘিরে দা, বটি, চাপাতি ও ছুরি তৈরিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা।
কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত একটানা চলছে কামারদের শ্রম। ঈদের এই মৌসুমে যেন তাদের দম ফেলারও ফুরসত নেই।
সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কুরবানির ঈদ এলেই কয়েকগুণ বেড়ে যায় কর্মব্যস্ততা। কামার পল্লীগুলোর দোকানগুলোয় টুংটাং শব্দে মুখর, আগুনে পিটুনির তাপে উজ্জ্বল লোহা—সব মিলিয়ে যেন ঈদ-পূর্ব প্রস্তুতির এক অনন্য দৃশ্যপট।
ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়ছে প্রতিদিন। দা, বটি, ছুরি ও চাপাতির চাহিদা যেমন বেড়েছে, দামও বেড়েছে তুলনামূলকভাবে। কামাররা জানিয়েছেন, এবার কয়লা ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দাম কিছুটা বেশি।
কামাররা জানিয়েছেন— পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি: ১০০–২০০ টাকা, দা: ২০০–৩৫০ টাকা, বটি: ২৫০–৫০০ টাকা, জবাইয়ের ছুরি: ৩০০–১,০০০ টাকা, চাপাতি: ৫০০–৮০০ টাকা।
ক্রেতা আব্দুল মজিদ বলেন, "একটি চাপাতি ৫০০ টাকায় কিনেছি, আরও কয়েকটি জিনিস কিনছি কুরবানির প্রস্তুতির জন্য।"
একইভাবে কামার পল্লীতে আসা আনোয়ার হোসেন বলেন, "কসাই পাওয়া কঠিন হয়, তাই নিজেরাই কুরবানি করব। এজন্য নতুন বটি কিনেছি, আর পুরনো দা-ছুরি শান দিচ্ছি। তবে গত বছরের তুলনায় ধার দেওয়া দাম কিছুটা বেশি নিচ্ছে।"
কামাররা জানান, কয়লার দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। আগে প্রতি বস্তা কয়লা ৪০০–৪৫০ টাকায় কিনতেন, এবার তা ৮০০–৮৫০ টাকা। শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে, তাই সামান্য দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কামার দোকানগুলো এখন টুংটাং শব্দে মুখরিত। আগুনে লাল হওয়া লোহায় হাতুড়ির বাড়ি পড়ছে এক ছন্দে। ঈদের মাত্র একদিন আগে কামাররা যেন নিরবচ্ছিন্ন ছন্দে প্রস্তুত হচ্ছেন কুরবানির ঈদের জন্য।
শিল্পীরা জানান, ঈদের দু’দিন আগে থেকে দিন-রাত সমানভাবে কাজ করেন তারা। অনেকেই এক মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন, যাতে ঈদের বিপুল চাহিদা পূরণ করা যায়।
What's Your Reaction?






