রাজশাহীতে প্রতারণার মাধ্যমে ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ

মো. গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
Jun 5, 2025 - 12:25
 0  2
রাজশাহীতে প্রতারণার মাধ্যমে ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ

রাজশাহীতে প্রতারণার মাধ্যমে ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ উঠেছে এক সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রাজশাহীর আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন ‘গ্রীন প্লাজা রিয়েল এস্টেট’ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাকিমা খাতুন ও তার স্বামী প্রকৌশলী কাজীমুল হককে। প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে কাজীমুল হককে। এর আগে তাদের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত আইনি নোটিশও পাঠানো হয়। একইসঙ্গে সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

বাদী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রাজশাহী নগরীর ‘গ্রীন মনোয়ারা প্যালেস’ নামক সাততলা আবাসিক ভবনের ৩য় তলার (বি-২) নম্বর ফ্ল্যাটটি বাজারমূল্য অনুযায়ী ৭৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় কিনতে সম্মত হন কাজীমুল দম্পতি। রেজিস্ট্রেশনের জন্য ২৬ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়।

কিন্তু সেদিন তারা দলিলে ফ্ল্যাটের মূল্য মাত্র ২৭ লাখ টাকা উল্লেখ করেন। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানালে কাজীমুল দম্পতি জানান, প্রকৃত মূল্য ৭৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকাই দেওয়া হবে—দলিলমূল্য কম দেখানো হয়েছে কর ফাঁকির উদ্দেশ্যে। ওইদিনই ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রি করা হয়।

সেই সময় নগদ ১৫ লাখ ৩২ হাজার টাকা, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকে ৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা এবং বিকাশে ২৫ হাজার টাকা—মোট ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। একইসঙ্গে প্রধান অভিযুক্ত কাজীমুল হক আরও ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার দুটি চেক প্রদান করেন এবং বাকি টাকা কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যাংকে জমা দেবেন বলে জানান।

কিন্তু এরপর কোনো টাকা পরিশোধ করা হয়নি। বরং কালক্ষেপণ শুরু করেন তারা। পরবর্তীতে ২ ফেব্রুয়ারি ও ২৮ মার্চে আরও ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিলেও এখনো বকেয়া রয়েছে ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। টাকা চাইলে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ বাদীর।

বিষয়টি জানতে চাইলে বুধবার বিকেলে প্রকৌশলী কাজীমুল হকের মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনে ‘রং নাম্বার’ বলে ফোন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একইভাবে কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাকিমা খাতুনও ফোন ধরেননি। একপর্যায়ে তিনিও ফোন কেটে দেন।

বাদী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “তারা স্পষ্ট প্রতারণা করেছেন এবং সরকারি বিধিও লঙ্ঘন করেছেন। টাকা চাইলে আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এজন্য বাধ্য হয়ে আইনের দ্বারস্থ হয়েছি।”

রাজশাহীর আমলী আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow