কুবির ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণিল আয়োজন, ঐক্য ও স্বপ্নের বার্তা উপাচার্যের

বর্ণাঢ্য আয়োজন ও প্রাণবন্ত পরিবেশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।
বুধবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলীর নেতৃত্বে এক আনন্দ র্যালি বের হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মুক্ত মঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। পরে কেক কেটে দিবসটির আনুষ্ঠানিক উদযাপন শুরু হয়।
এরপর বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমাইয়া আফরিন সানি এবং ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারিন বিনতে এনামের সঞ্চালনায় মুক্ত মঞ্চে শুরু হয় এক আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. এম. এম. শরীফুল করীম এবং প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম।
আলোচনায় বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ইতিহাস, বর্তমান অর্জন ও ভবিষ্যৎ পথচলার নানা দিক তুলে ধরেন।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্যসহ প্রতিষ্ঠাকালীন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগেই আজকের এ অবস্থান। আমাদের অঙ্গীকার হোক—কোনো বিভাজন নয়, সম্মিলিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেওয়া।”
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট শাসনের পর আজ মুক্তভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করতে পারছি। এই পরিবর্তন আমাদের নতুন স্বপ্ন ও প্রত্যয় দিয়েছে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে কাঠামোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চা, সচেতনতা ও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস দরকার।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলী বলেন, “আজ ২৮ মে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯ বছরে পা রাখল। চব্বিশের ছাত্র আন্দোলন থেকে আমরা দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয় পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়েও যেন কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি না থাকে, সেটিই আমাদের লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “২৮৩ জন শিক্ষকের মধ্যে ১০১ জনের প্রোফাইল খালি—এটি আমাদের আন্তর্জাতিক অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। শুধু পাঠদান নয়, গবেষণা ও জ্ঞান সৃষ্টিই শিক্ষকতার প্রকৃত উদ্দেশ্য। যদিও শিক্ষকসংকট, অর্থায়নসহ নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তবুও আমাদের শিক্ষকরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।”
আলোচনা সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ২৮ মে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের ২৬তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৭ সালের ২৮ মে। বর্তমানে ৬টি অনুষদের অধীনে ১৯টি বিভাগে ৭ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন।
What's Your Reaction?






