আখাউড়া পৌরসভার প্রধান সমস্যা যানজট ও জলাবদ্ধতা, সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ চান নাগরিকরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভার নাগরিক জীবনের প্রধান অন্তরায় হয়ে উঠেছে যানজট, নাজুক ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও জলাবদ্ধতা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ফুটপাত দখল, ময়লার স্তুপ, মাদক, চুরি-ছিনতাই এবং নাগরিক সেবা প্রদানে দীর্ঘসূত্রতা। এসব সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন পৌরবাসী।
বুধবার (৪ জুন) সকালে পৌরসভার হলরুমে আয়োজিত “গণশুনানি ও নাগরিক মতামত” শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব ইস্যুতে সরব ছিলেন পৌরবাসী, সুধীসমাজ ও পেশাজীবীরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি.এম. রাশেদুল ইসলাম।
সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর বাহার মিয়া, সাবেক কাউন্সিলর মোঃ মন্তাজ মিয়া, স্বপন মিয়া, রফিকুল ইসলাম শিশু, আতিকুর রহমান, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর নারগিছ বেগম, সমাজসেবক সফিউল আলম স্বপন, শিক্ষক সফিকুল আলম তুরান, আরিফুর রহমান খাদেম, সিরাজ মিয়া, সুকান্ত চক্রবর্তী, শিক্ষক অলোক কুমার চক্রবর্তী, বিএনপি নেতা আবুল ফারুক বকুল, শিক্ষক আকিলা বিনতে সহিদ এবং স্থানীয় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক-সামাজিক নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের প্রধান সড়ক ও অলিগলি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। অকার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বাড়ছে নাগরিক দুর্ভোগ। বিশেষ করে রেলওয়ে স্কুলের সামনের ময়লার ভাগাড় থেকে ছড়িয়ে পড়ছে তীব্র দুর্গন্ধ, যা জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে।
তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভায় জনপ্রতিনিধি না থাকায় নাগরিক সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া শহরে চুরি ও ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের টহল বাড়ানোর আহ্বান জানান বক্তারা। পাশাপাশি মাদকের বিস্তার রোধে প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বক্তারা আরও বলেন, শহরের বিভিন্ন খাল ও নালাগুলো অবৈধ দখলে এবং ময়লায় পরিপূর্ণ থাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি জানান তারা।
সভাপতির বক্তব্যে পৌর প্রশাসক জি.এম. রাশেদুল ইসলাম বলেন, “সীমিত অর্থবাজেটের মধ্যেও নাগরিক সেবায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যানজট নিরসন ও পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, নাগরিক মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই আগামী কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
উল্লেখ্য, আখাউড়া ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত পৌরসভা হলেও নাগরিক সুবিধার ক্ষেত্রে তা দৃশ্যমান নয় বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নিয়মিত তদারকি, স্বচ্ছতা ও জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলেও মত দেন বক্তারা।
What's Your Reaction?






