ব্যাঙছড়ি জয়মঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ব্যাঙছড়ি মারমা পাড়ার জয়মঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে সম্পন্ন হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দানোৎসব। সোমবার (২৭ অক্টোবর) দিনব্যাপী এ দানোৎসবে হাজারো পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণে বিহার প্রাঙ্গণ পরিণত হয় এক শান্ত-সৌম্য ধর্মীয় মিলনমেলায়।
দিনব্যাপী আয়োজিত এ উৎসবের ধর্মসভায় সভাপতিত্ব করেন রাজনিকায় মার্গে মহাসংঘনায়ক (মাংগঁই) ও ঐতিহ্যবাহী চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত পামোক্ষা মহাথেরো। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নাইক্য-বান্দায়া পাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ক্ষেমাচারা মহাথেরো। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উদালবনিয়া পাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত পাইন্দাওয়াইন্সা মহাথেরো এবং বাঙ্গালহালিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ভদন্ত উত্তরা মহাথেরো। প্রধান জ্ঞাতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মগোদা বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ঞানাওয়াইন্সা মহাথেরো।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পঞ্চশীল পাঠ ও মঙ্গলাচরণ শেষে ভিক্ষুসংঘকে চীবর উৎসর্গ করা হয়। সকাল থেকে শুরু হওয়া ধর্মীয় কার্যক্রমের মধ্যে ছিল পরিত্রাণ পাঠ, পুষ্পপূজা, ভিক্ষুসংঘের প্রাতরাশ, জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধপূজা, শীলগ্রহণ, কল্পতরু দান, সংঘদান, ধর্মদেশনা এবং অনুত্তর পুণ্যক্ষেত্র ভিক্ষুসংঘকে পিণ্ডদান।
দিনব্যাপী এ উৎসবে মারমা, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। পুণ্যার্থীরা ভিক্ষুসংঘের উদ্দেশে চীবর ও বিভিন্ন দান প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের শেষে ধর্মদেশনার মধ্য দিয়ে ‘মুক্তির অহিংসা বাণী ছড়িয়ে যাক মানুষে মানুষে, ফিরে আসুক শান্তি ও সম্প্রীতি’—এই প্রার্থনা জানিয়ে কঠিন চীবর দান উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। সন্ধ্যায় ছিল প্রদীপ প্রজ্বলন ও ফানুস বাতি উত্তোলনের মনোমুগ্ধকর আয়োজন, যা উৎসবের আনন্দকে আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।
What's Your Reaction?
রিপন মারমা, কাপ্তাই প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটিঃ