দুর্নীতিকে হটিয়ে সৎ নেতৃত্বের প্রতিষ্ঠাই আগামী নির্বাচনের মূল লক্ষ্য: মাসুদ সাঈদী

প্রচলিত রাজনীতির বৃত্ত ভেঙে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা মাসুদ সাঈদী বলেছেন, আগামী নির্বাচন হবে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার নির্বাচন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অফুরন্ত প্রাকৃতিক ও মানব সম্পদে সমৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও কেবল নেতৃত্বের সংকট ও সর্বগ্রাসী দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সেখমাটিয়া ইউনিয়নে আয়োজিত এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই জোরালো আহ্বান জানান। শেখমাটিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি হাফেজ আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি মাওলানা জাকির হোসাইন।
মাসুদ সাঈদী বলেন, "শুধু সৎ, যোগ্য এবং দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা হলেই বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব।"
সমসাময়িক রাজনীতির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ সরকার যেমন জামায়াত-শিবিরকে দমনের নীতি নিয়েছিল, বিএনপিও এখন ঠিক সেই একই পথে হাঁটছে। এতে শুধু ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে, নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। দেশের যেকোনো ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের ওপর দায় চাপানো একটি সহজ রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।" তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, "আমাদের নেতাদের ফাঁসি দিয়ে এবং ভাইদের হত্যা করেও সরকারের শেষ রক্ষা হয়নি, ভবিষ্যতেও আমাদের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।"
ঐতিহাসিক ডাকসু নির্বাচনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, "১০৪ বছরের ইতিহাসে ছাত্রশিবিরের ২৩টি পদে বিজয় প্রমাণ করে যে সততা, আদর্শ ও সুন্দর আচরণের কোনো বিকল্প নেই। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের মন থেকে গ্রহণ করেছে।"
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে বলেন, "পিরোজপুরের তিনটি আসনেই জামায়াতে ইসলামী বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। বিজয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এক মুহূর্তের জন্যও মাঠ ছাড়া যাবে না।"
নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির দাবি জানিয়ে বলেন, "বিগত নির্বাচনগুলোতে মাত্র ৩০-৩৫ শতাংশ ভোট পেয়ে দলগুলো সরকার গঠন করেছে, যেখানে ৬৫ শতাংশ মানুষের মতামতের কোনো মূল্য ছিল না। আমরা জনগণের পূর্ণাঙ্গ মতামতের ভিত্তিতে দেশ চালাতে চাই, তাই পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চাই। যারা জনমতকে ভয় পায়, তারাই এই পদ্ধতির বিরোধিতা করে।"
কর্মী সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা মজলিসুল মুফাসসিরিনের সভাপতি অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অধ্যাপক সোহরাব হোসাইন জুয়েল, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, সেক্রেটারি সাবেক সেনাকর্মকর্তা কাজী মোসলেহ্ উদ্দিনসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
What's Your Reaction?






