নবীনগরে প্রথমবারের মতো গ্যাপ পদ্ধতিতে লাউ ও বেগুন আবাদ

পার্টনার প্রকল্পের আওতায় নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নে এই প্রথম লাউ ও বেগুন আবাদ শুরু হয়েছে "উত্তম কৃষি চর্চা" বা "গুড এগ্রিকালচার প্যাকটিস (গ্যাপ)" এর মাধ্যমে। এই উদ্যোগের ফলে দুই একর জমিতে কৃষক মাইনুদ্দিন ও সুমন মিয়া সফলভাবে চাষাবাদ করছেন।
কৃষি বিভাগের পরামর্শে চলতি মৌসুমে ফসলের আবাদ কার্যক্রম শুরু হয়। কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে মাটি এবং পানি পরীক্ষা করা হয়েছে, যা উত্তম কৃষি চর্চার প্রথম শর্ত। এই পদ্ধতিতে সুষম সার প্রয়োগ, জৈব সার ব্যবহার, এবং ফসল আবর্তনের মাধ্যমে মাটির উর্বরতা বজায় রাখা হয়। এছাড়া, পানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি হিসেবে ড্রিপ বা স্প্রিঙ্কলার ব্যবহৃত হচ্ছে এবং কম রাসায়নিক ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব কৃষি চর্চা করা হচ্ছে।
কৃষক মাইনুদ্দিন জানান, তিনি প্রথমে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং এরপর কৃষি বিভাগের আর্থিক সহযোগিতায় মাটি ও পানি পরীক্ষা করেন। তিনি সার সুপারিশমালা অনুসারে সার প্রয়োগ ও পর্যাপ্ত জৈব সার ব্যবহার করেছেন। ইতিমধ্যে লাউ দুই দফা বাজারে বিক্রি করা হয়েছে এবং রোগ বালাই তেমন দেখা যায়নি।
অপর কৃষক সুমন মিয়া জানান, কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে বেগুন উৎপাদনের জন্য উপকরণ গ্রহণ করেছেন। তিনি আশাবাদী যে, বিষমুক্ত এবং নিরাপদ বেগুন উৎপাদন করতে পারবেন।
উপ-সহকারি কৃষি অফিসার গিয়াসউদ্দিন নাঈম বলেন, "চলতি মৌসুমে আমার ব্লকে দুটি গ্যাপের আওতায় প্রদর্শনী বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছি। উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে উৎপাদিত ফসলের ফলন ভালো হচ্ছে এবং রোগ বালাই কম হচ্ছে। এই প্রযুক্তি কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হচ্ছে।"
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, "গ্যাপ পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বাংলাদেশের কৃষিতে আন্তর্জাতিক মান নিয়ে কাজ করছে। নবীনগর উপজেলায় ৪৫০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং ছয়টি কৃষক মাঠ স্কুলের মাধ্যমে ১৫০ জন কৃষককে মৌসুমব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত সবজি শতভাগ নিরাপদ এবং রপ্তানিযোগ্য, যা ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে।"
এভাবে, নবীনগর উপজেলার কৃষকরা গ্যাপ পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসলের মাধ্যমে দেশে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের স্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন।
What's Your Reaction?






