ফরিদপুরে নারী পাচার মামলায় দুই নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ফরিদপুরে এক নারীকে ভারতে পাচারের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় দুই নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার (১৮ জুন) দুপুর ২টার দিকে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীমা পারভীন এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত দুই নারী হলেন—সাতক্ষীরার বৈশালী গ্রামের মাকসুদা বিবি (৪৯) এবং মুন্সীগঞ্জের হটচারীপুর এলাকার মর্জিনা বেগম সোনালী (৩১)। তবে রায় ঘোষণার সময় তারা পলাতক থাকায় আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ৮ মে ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর এলাকার একটি জুট মিলে কাজ করা অবস্থায় এক তরুণীকে অনুষ্ঠান দেখানোর কথা বলে নিজ বাড়ি সাতক্ষীরায় নিয়ে যান মাকসুদা বিবি। পরে সুন্দরবন ঘুরাতে যাওয়ার প্রলোভনে তাকে ভারতে পাচার করে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এই কাজে মাকসুদার সহযোগী ছিলেন মর্জিনা বেগম।
মেয়েটির মা রাজিয়া বেগমের ভাষ্য অনুযায়ী, ঘটনার পর থেকে মেয়ে ও আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এক পর্যায়ে ভারত থেকে একটি ফোনে জানানো হয়—তার মেয়ে পাচার হয়ে এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এরপর বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহায়তায় মেয়ের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়। ভারতীয় পুলিশ ২০১২ সালের ১৮ মে তাকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা রাজিয়া বেগম ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় ২০১২ সালের ২৯ মে মামলা করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য-প্রমাণ পর্যালোচনার পর আদালত এই রায় দেন।
ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন বলেন, “নারী পাচারের মতো ভয়াবহ অপরাধে আদালত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়েছেন। এতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
বর্তমানে পাচার হওয়া ওই নারী দেশে ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন বলে জানানো হয়েছে।
What's Your Reaction?






