নোয়াখালীতে একদিনে ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি, জোয়ারের পানিতে প্লাবিত বহু এলাকা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে নোয়াখালীতে টানা ভারী বর্ষণে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে একদিনে সর্বোচ্চ। অতিরিক্ত জোয়ারের পানির সঙ্গে মিলে এই বৃষ্টিপাত জেলার উপকূলীয় অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্যোগের সৃষ্টি করেছে।
জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর, চরহাজারী, চরএলাহী এবং দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বিভিন্ন নিচু এলাকাগুলো ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোয়ারের পানি প্রবেশ করে নিঝুম দ্বীপ, চরইশ্বর, ঢালচর, নলচিরা ও চরঘাসিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করে দেয়। পানিতে তলিয়ে যায় ঘরবাড়ি, রাস্তা ও ফসলি জমি। ভেসে গেছে শত শত মাছের ঘের ও পুকুর।
হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপের বাসিন্দা মোমিন বাবলু জানান, “জোয়ারের পানি এখনো প্রবলভাবে ঢুকছে। পুরো দ্বীপ পানির নিচে। প্রধান সড়কগুলো ডুবে গেছে। প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।”
নদ-নদীতে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানীগঞ্জ ও হাতিয়ার বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। সাগর উত্তাল থাকায় টানা তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে হাতিয়ার সঙ্গে সারাদেশের নৌ যোগাযোগ। এমভি প্রাহিম নামের একটি পণ্যবাহী ট্রলার হাতিয়ার মেঘনা নদীতে ডুবে গেছে, যার মালামালের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা।
নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর ফ্ল্যাট রোড, শিল্পকলা একাডেমি সংলগ্ন এলাকা ও হাকিম কোয়ার্টার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি সদর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ ছিল না দীর্ঘসময় ধরে।
জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গভীর নিম্নচাপের কারণে আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
উপকূলীয় অঞ্চলে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বলবৎ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমদ বলেন, “বৈরী আবহাওয়া মোকাবেলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। জানমাল রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও রেডক্রিসেন্টসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কাজ করছে।”
What's Your Reaction?






