দায়িত্বে নিষ্ঠা, বিদায়ে অশ্রু—বিদায় ফয়ছেল আহাম্মদ খান

শাহাবউদ্দিন আহমেদ, আখাউরা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ
May 29, 2025 - 12:07
 0  22
দায়িত্বে নিষ্ঠা, বিদায়ে অশ্রু—বিদায় ফয়ছেল আহাম্মদ খান

দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছরের কর্মজীবনের অবসান ঘটালেন আখাউড়া পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. ফয়ছেল আহাম্মদ খান। বদলিজনিত কারণে বুধবার (২৮ মে) দুপুরে পৌর প্রশাসনের আয়োজনে এক হৃদয়ছোঁয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় তাঁকে বিদায় জানান পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

কর্মজীবনে সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার কারণে তিনি আখাউড়াবাসীর কাছে হয়ে উঠেছিলেন প্রিয় মুখ। সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌরসেবা পৌঁছে দিতে কখনোই ক্লান্ত হননি তিনি। রোদ-বৃষ্টি-শীত উপেক্ষা করে প্রতিদিন নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে। রাস্তাঘাট, পানি নিষ্কাশন কিংবা যেকোনো সমস্যা হলে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে সমাধানে উদ্যোগ নেওয়াই ছিল তাঁর অভ্যাস।

বিদায় বেলায় আবেগে কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসে প্রকৌশলী ফয়ছেলের। বলেন, “আখাউড়া আমার চাকরি জীবনের প্রথম কর্মস্থল। এখানকার মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা আমি কোনোদিন ভুলবো না। তাদের সহযোগিতাই আমাকে দায়িত্ব পালনে অনুপ্রাণিত করেছে।”

পরে উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের উদ্যোগে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে তাঁর সম্মানে আরও একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি.এম. রাশেদুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খান, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহান, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ছমিউদ্দিনসহ আরও অনেকে।

বক্তারা বলেন, “বদলি সরকারি চাকরির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও ফয়ছেল আহাম্মদ খানের মতো কর্মনিষ্ঠ, সদালাপী ও মানবিক প্রকৌশলীকে বিদায় জানানো আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তিনি শুধু একজন কর্মকর্তা নন, ছিলেন একজন সেবক, যিনি সবসময় মানুষের পাশে থেকেছেন।”

অনুষ্ঠানে ইউএনওসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা তাঁর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে।

বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সাংবাদিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গুণীজনেরা। সবাই চোখের জল ফেলে বিদায় জানান প্রিয় এই প্রকৌশলীকে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে ফয়ছেল আহাম্মদ খান বলেন, “আমি সর্বদা চেষ্টা করেছি সরকারি দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালনে। আখাউড়ার মানুষের ভালোবাসা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আমি তাঁদের প্রতি চিরঋণী।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow