জ্বলন্ত স্বপ্নের ছাই, রাইসার দাফনে কাঁদল পুরো গ্রাম

কবির হোসেন, আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর ) প্রতিনিধিঃ
Jul 25, 2025 - 12:36
 0  43
জ্বলন্ত স্বপ্নের ছাই, রাইসার দাফনে কাঁদল পুরো গ্রাম

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় জীবন হারানো ৯ বছরের শিশু রাইসা মনির মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা এলাকা। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার বাজড়া গ্রামে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয় তৃতীয় শ্রেণির এই ছাত্রীর।

প্রিয় মেয়েটির মৃত্যুর খবরে সকাল থেকে গ্রামের শত শত মানুষ ভিড় করেন রাইসাদের বাড়িতে। চারদিকে শুধু কান্নার রোল—"আমাদের রাইসা আর নেই!" এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য যেন কখনো দেখেনি বাজড়া দক্ষিণপাড়া।

শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে বাজড়া দক্ষিণপাড়া ঈদগাহ মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে দাফন করা হয় বাজড়া শামসুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা কবরস্থানে। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল, সেনাবাহিনীর সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় শত শত মানুষ।

দুর্ঘটনার পরদিন থেকেই নিখোঁজ ছিল রাইসা। অবশেষে গত মঙ্গলবার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পুড়ে যাওয়া এক শিশুর মুখ দেখে তাকে শনাক্ত করেন বাবা শাহাবুল শেখ। পরে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয় পরিবারকে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাইসা ছিল শাহাবুল শেখ ও মীম আক্তার দম্পতির মেঝো সন্তান। ঢাকার উত্তরা নয়ানগরে ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা। স্বপ্ন ছিল সন্তানদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার। সেই স্বপ্নই এক নিমিষে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল।

রাইসার চাচা ইমদাদুল শেখ বলেন, “মঙ্গলবার দুপুরে সিএমএইচে গিয়ে মেয়েটির পুড়ে যাওয়া মুখমণ্ডল দেখে ভাই শনাক্ত করেন। আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি, রাইসা আর নেই।”

গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ওবায়দুর রহমান বলেন, “বাড়িতে লাশ আসার পর গ্রামের কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। মেয়েটার অকাল মৃত্যু সবাইকে কাঁদিয়ে গেল।”

আলফাডাঙ্গা ইউএনও রাসেল ইকবাল বলেন, “এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক একটি ঘটনা। একটি নিষ্পাপ শিশুর জীবন এমনভাবে থেমে যাবে, ভাবতেই কষ্ট হয়। আমরা রাইসার পরিবারের পাশে রয়েছি।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow