মায়ের কোলেই ঝরল শিশুর রক্ত, সন্তানের হন্তারক হয়ে মায়ের আত্মহত্যা

মায়ের কোলই সন্তানের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়। কিন্তু সেই চিরচেনা সত্যকে মিথ্যা প্রমাণ করে ফরিদপুরে ঘটল এক হৃদয়বিদারক ও অকল্পনীয় ঘটনা। যে হাতে সন্তানকে আগলে রাখার কথা, সেই হাতেই নির্মমভাবে খুন হলো পাঁচ বছরের শিশু। নিজের নাড়িছেঁড়া ধনকে হত্যার পর শোকে, যন্ত্রণায় নাকি অন্য কোনো অজানা কারণে আত্মহননের পথ বেছে নিলেন মা। এই মর্মান্তিক ঘটনায় পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া, আর সবার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে একটাই প্রশ্ন— কেন?
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামে এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে। নিহতরা হলেন ওই গ্রামের রমজান শেখের স্ত্রী সুমাইয়া বেগম (২৩) এবং তাদের একমাত্র সন্তান হুজাইফা (৫)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় সুমাইয়া বেগম তার শিশুপুত্র হুজাইফাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর নিজে ঘরের আড়ার সাথে রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। দীর্ঘক্ষণ তাদের কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় প্রতিবেশীদের সন্দেহ হলে তারা ঘরের ভেতরে উঁকি দিয়ে মা ও সন্তানের নিথর দেহ দেখতে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় সুমাইয়াকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকদেব রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘরের খাটের ওপর থেকে শিশুটির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছি। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি যে, শিশুটিকে হত্যার পর তার মা গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে কী কারণে এমন একটি নৃশংস ঘটনা ঘটল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। আমরা ঘটনার পেছনের রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।"
একটি পরিবারের এমন করুণ পরিণতিতে পুরো গ্রাম স্তব্ধ ও বাকরুদ্ধ। এলাকাবাসীর কান্না আর দীর্ঘশ্বাসে ভারী হয়ে উঠেছে পূর্বকান্দির বাতাস।
What's Your Reaction?






